নিজস্ব
প্রতিবেদক: দেশে গত এক দিনে আরও ৬ হাজার ৯৫৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের
সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে ১৭৪ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে,
সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ওই ৬
হাজার ৯৫৯ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এ নিয়ে দেশে মোট ১৪ লাখ ২৫ হাজার
৮৬১ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হল; আর আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হল মোট ২৪ হাজার
৩৪৯ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সোমবার নমুনা
পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ। এই হার আগের দিন ছিল ২০
দশমিক ২৫ শতাংশ। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে জুলাই মাসের
বড় একটি সময় তা ৩০ শতাংশের উপরে বা আশপাশে ছিল।
আগের দিন রোববার সারা
দেশে ৬ হাজার ৬৮৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়, মৃত্যু হয় ১৮৭ জনের। সেই হিসেবে
এক দিনে মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও শনাক্ত রোগী বেড়েছে।
গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ৪ হাজার ১৭০ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে যা দিনের মোট আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি।
আর এই সময়ে যে ১৭৪ জন মারা গেছেন, তাদের ৭০ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সরকারি হিসেবে এক দিনে সেরে উঠেছেন ৯ হাজার ২৬৮ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১৩ লাখ ১ হাজার ৯৬৬ জন।
দেশে
এখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৯৯ হাজার ৫৪৬ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক মানুষ এখন
নিশ্চিতভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছেন। জুলাইয়ে এই সংখ্যা দেড়
লাখও ছাড়িয়েছিল।
সাপ্তাহিক পরিস্থিতির যে হিসাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
সোমবার দিয়েছে, তাতে ৯ থেকে ১৫ অগাস্ট- এই এক সপ্তাহে ২ লাখ ৯১ হাজার ১১১টি
নমুনা পরীক্ষা করে ৬৫ হাজার ২০৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
পরীক্ষার
এই সংখ্যা আগের সপ্তাহের (২ থেকে ৮ অগাস্ট ) তুলনায় ১০.৯৭ শতাংশ কম। আর
শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৭.০৩ শতাংশ কম। গত এক সপ্তাহে কোভিডে মারা গেছেন মোট ১
হাজার ৫২৩ জন, যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ১২.২৭ শতাংশ কম।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। ডেল্টা
ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে গত জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু হু করে বেড়ে ১৪ লাখ
পেরিয়ে যায় গত ১৩ অগাস্ট। তার আগে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন
নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ
দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১৫ অগাস্ট তা ২৪
হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর
আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৩ লাখ ৬১ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২০ কোটি ৭১ লাখের বেশি রোগী।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ৩৩ হাজার ১৫টি নমুনা পরীক্ষা
হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৮৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৬টি নমুনা।
নমুনা
পরীক্ষার বিবেচনায় দৈনিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ০৮ শতাংশে, এ
পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মৃত্যুর হার
দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৭১ শতাংশে।
গত এক দিনে ঢাকা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ ৩
হাজার ৩৪৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া এ বিভাগের গাজীপুর জেলায় ১৮৯
জন, মুন্সীগঞ্জে ১৯৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের
মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ২৩০ জন, নোয়াখালীতে ১০০ জন, চাঁদপুরে ২৬৭ জন,
কুমিল্লায় ২৫৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। অন্য বিভাগগুলোর বিভিন্ন জেলার
মধ্যে ময়মনসিংহে ১৪৯ জন, সিলেটে ২৬৪, পাবনায় ১২৫, খুলনায় ১৫৬ জনের মধ্যে
সংক্রমণ ধরা পড়েছে গত এক দিনে।
ঢাকা বিভাগে গত এক দিনে যে ৭০ জনের
মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৩৫ জনই ছিলেন ঢাকা জেলার। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা যাওয়া
৩৭ জনের মধ্যে ৮ জন চট্টগ্রাম জেলার এবং ৮ জন কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা
ছিলেন।
এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ১৭ জন, বরিশাল বিভাগে ৭ জন, খুলনা বিভাগে
১৯ জন, রংপুর বিভাগে ৭ জন, সিলেট বিভাগে ৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১ জনের
মৃত্যু ঘটেছে গত এক দিনে।
মৃত ১৭৪ জনের মধ্যে ৯৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের
বেশি, ৪১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের
মধ্যে, ১২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের
মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৯০ জন
ছিল পুরুষ, ৮৪ জন নারী। ১৩৪ জন সরকারি হাসপাতালে, ৩৬ জন বেসরকারি হাসপাতালে
এবং ৪ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।