Published : Monday, 6 September, 2021 at 12:00 AM, Update: 06.09.2021 2:17:20 AM
--
এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ কুমিল্লার দেবীদ্বারে শতছরের পুরনো প্রবাহমান একটি খালের প্রায় ২শত ফুট জায়গা স্থানীয় আব্দুল্লাহপুর কেন্দ্রীয় গোরস্তান কমিটি কর্তৃক ভরাটের মাধ্যমে বেদখল করা অংশটি অবশেষে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে অবমুক্ত করা হয়েছে। ওই খালের হারিয়ে যাওয়া শ্রোতধারায় ফসলী জমির প্রাণ ফিরে পেয়ে শত কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। রোববার দুপুরে আব্দুল্লাহপুর এলাকা ঘুরে কৃষকদের মলিন চেহারা বদলে এমন আনন্দ উল্লসিত চেহারা চিত্রটারই দেখা মিলেছে।আব্দুল্লাহপুর গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম’র স্ত্রী দরিদ্র কৃষাণী নার্গিস আক্তার সাংবাদিকদের দেখে আনন্দে অশ্রæসিক্ত হয়ে জানালেন, আমাদের দূর্দিন কেটে গেছে, তিনি সাংবাদিক, প্রশাসন এবং দৈনিক কুমিল্লার কাগজ পত্রিকা সহ বিভিন্ন পত্রিকার প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ছোট্ট একটি আঘাতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। আমাদের সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখির খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইজবুকে) দেখেছি। আপনাদের সহযোগীতায় আমরা আমাদের ফসলী মাঠের প্রাণ ফিরে পেয়েছি।
জানা যায়, প্রায় তিন বছর পূর্বে স্থানীয় একটি গণকবরের পরিধি বাড়াতে ‘আব্দুল্লাহপুর গোরস্তান কমিটি’ পানি প্রবাহীত আব্দুল্লাহপুর খালের প্রায় ২শত ফুট জায়গা ভরারট করার প্রতিবাদে গত ২৫ আগষ্ট ক্ষতিগ্রস্থ শতাধিক কৃষকের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। ওই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের সংবাদ দৈনিক কুমিল্লার কাগজ পত্রিকায় সহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে খালটি পুন:খনন করায় হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, খালটিকে জীবন্ত গলাটিপে রাখায় এলাকার কয়েকটি গ্রাম ও বিলের বিশেষ করে শিবনগর, তাল্লুকের পাত্তর, আব্দুল্লাহপুর, ওয়াহেদপুর, কানিবিল, রামনগর, নারায়নপুরসহ কয়েকশত একর জমির ফসলে বিলের পানি আটকে থেকে ক্ষতিগ্রস্থই নয়, বেশকিছু বাড়ি-ঘরও পানির নিচে তলিয়ে যায়। আব্দুল্লাহপুর কেন্দ্রীয় গণকবরটি প্রায় ৩শত বছরের পুরনো। প্রায় ১০ একর জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এ গণকবরটি ব্যাহার করা যাবে আরো ৫শত বছর। তার পরও কবর কমিটি বৃটিশ শাসনামলে এ অঞ্চলের পানি নিষ্কাসন ও কৃষির উন্নয়নে খননকৃত এ খালটি ভরাট করে পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে দিয়েছিল।
উল্লেখ্য বৃটিশ শাসনামলে এই এলাকার পানি নিষ্কাশন ও কৃষির উন্নয়নে খালটি খনন করা হয়েছিল। যে খালটি শাখা প্রশাখা সালদা, মরজড়া, বুড়ি, তিতাস ও গোমতী নদীর সাথে সংযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালের প্রথমদিকে আব্দুল্লাহপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানের প্রশস্তকরণে কবরস্থান কমিটি ওই খালটির প্রায় ২শত ফুট অংশ ভরাট করেন। ফলে এ খালটিকে জীবন্ত গলাটিপে রাখায় এলাকার কয়েকটি গ্রাম ও বিলের বিশেষ করে শিবনগর, তাল্লুকের পাত্তর, আব্দুল্লাহপুর, ওয়াহেদপুর, কানিবিল, রামনগর, নারায়নপুরসহ কয়েকশত একর জমির ফসলের বিলে পানি আটকে থেকে ক্ষতিগ্রস্থই নয়, বেশকিছু বাড়ি-ঘরও পানির নিচে তলিয়ে যায়। গোরস্তান কমিটির পক্ষ থেকে ভরাট অংশে মোটা পাইপের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা করে দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিলেও পরবর্তিতে ওই উদ্যোগ আর নেয়া হয়নি।
রোববার বিকেলে সেল ফোনে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হাসান জানান, কুমিল্লার কাগজ পত্রিকায় সহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ দেখে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মোঃ গিয়াস উদ্দিনকে বিষয়টি তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেই। পরবর্তিতে অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হলে গোরস্তান কমিটিকে তাদের নিজ দায়িত্বে খনন করার নির্দেশ দিলে খালের ওই ভরাট অংশ পুন:খননে পানি প্রবাহের গতি ফিরে আসে।