দেশের বন্যাকবলিত বিদ্যালয়গুলো আগামী ১২ সেপ্টেম্বর খোলার বিষয়ে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। বন্যা পরিস্থিতির পর সুবিধাজনক সময়ে এসব বিদ্যালয় খুলে দিয়ে শ্রেণি পাঠদান শুরু করতে হবে। তবে বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে যেসব বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়নি, কিংবা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে না, সেগুলোতে যথাসময়ে শ্রেণি পাঠদান শুরু করতে হবে। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর এ তথ্য জানিয়েছে।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যেসব বিদ্যালয় বন্যাকবলিত সেসব বিদ্যালয় খুলে দিয়ে শ্রেণি পাঠদান করার প্রয়োজন নেই। তারা পরে শ্রেণি পাঠদান শুরু করবে। অনেক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সে বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বন্যাকবলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হবে। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, তারা সরাসরি বিদ্যালয়ে ক্লাস পরিচালনা করবেন না। তবে অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করতে হবে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর জানায়, বন্যায় দেশের প্রায় ১০টি জেলা প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গেছে। বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়, দেশের বিভিন্ন পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শিগগিরই বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হবে। এছাড়া বন্যায় অনেক বিদ্যালয়ে পানি জমে যায়, সেসব বিদ্যালয়ে ক্লাস হবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে সেসব প্রতিষ্ঠানের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। বন্যাকবলিতদের পাশে দাঁড়াতে শিক্ষক-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।.
অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘বন্যায় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে পানি জমে গেছে। রাস্তায় পানি ওঠায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পৌঁছাতে পারে না। সেসব বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। তবে শিক্ষক-কর্মচারীরা বিদ্যালয়ের দেখভাল করবেন স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বন্যাকবলিত এলাকার জন্য এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতা নেই। অধিদফতরের বিশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুবিধা মতো সময়ে খুলতে পারবে।’
প্রসঙ্গত, করোনার কারণে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। গত ৫ সেপ্টেম্বরের আন্তমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান শুরু হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে ইতোমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর ১৯ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩১ দফা নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে শ্রেণি পাঠদান পরিচালনা করতে হবে।