--
মাসুদ আলম।। ৩
ঘন্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকা। ডুবে
গেছে সড়ক, অলিগলি, দোকানপাট ও বসতঘর। কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
পানিতে ভাসছে ময়লা-আবর্জনা। কোথাও আবার হাঁটু কিংবা কোমর পর্যন্ত থৈ থৈ করে
পানি। এতে দুর্ভোগে পড়েন অনেকে। রবিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হওয়া টানা
তিনঘন্টার মুষলধারে বৃষ্টিতে কুমিল্লার সিটি করপোরেশন এলাকায় এই পরিস্থিতি
সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানিতে নাকাল হয়ে পড়ে কুমিল্লাবাসী।
হাঁটু কিংবা
কোমর পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পানিতে আটকা
পড়ে বিকল হয়ে পড়েছে অনেক যানবাহন। দোকানপাট বন্ধ করে ফেরা মানুষ পড়েন
সীমাহীন দুর্ভোগে। ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন সাধারণ মানুষরাও।
রবিবার
রাতে এই মুষলধারে বৃষ্টিতে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকার কান্দিরপাড় থেকে
ঈদগাঁও, টমছম ব্রিজ, রাণীরবাজার, টমছম ব্রিজ থেকে জাঙ্গালিয়া, সালাউদ্দিন
মোড়, মহিলা সরকারি কলেজ রোড, শাসনগাছা রোড। এছাড়া নগরীর ঠাকুরপাড়া,
অশকতোলা, চর্থা, বাগিচাগাঁও, কালিয়াজুরি, রেইসকোর্স, কান্দিরপাড়,
কাপ্তানবাজার, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এলাকাসহ পুরো সিটি
করপোরেশন এলাকায় তলিয়ে যায়।
এদিকে জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়,
ররিবার রাতে টানা তিন ঘন্টায় কুমিল্লায় বজ্রসহ অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে। এতে
করে কুমিল্লা নগরীসহ আশেপাশের সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি
হয়েছে বাসা বাড়ীতে। কুমিল্লা আবহাওয়া অফিস ১০৬ মিঃমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড
করেছে। রাত ৮ঃ৪৫ মিনিটে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। রাত পৌনে ১২ টা পর্যন্ত একটানা
বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এ সময় মূর্হমুহ বজ্রপাতে আতংকিত হয়ে পড়ে
নগরবাসী। বিপদে পড়ে নিম্ন আয়ের মানুষজন। বিশেষ করে সড়কে পানি বৃদ্ধি
পাওয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের রিকশার মোটর বিকল হয়ে পড়ে। বহু
মোটরবাইক চালকদেরও দেখা যায় বন্ধ হওয়া বাইকটি ঠেলে গন্তব্যে যেতে।
এদিকে
টানা তিন ঘন্টার বৃষ্টিতে নগরীর আবাসিক এলাকায় বাসাগুলো পানি উঠে। নগরীর
কান্দিরপাড় এলাকার বাসিন্দা কালিপদ দেবনাথ জানান, ভারি বৃষ্টিতে আমাদের
কষ্ট বেড়ে যায়। আমরা নীচ তলায় থাকি। ভারী বৃষ্টি হলেই বাসার পানি প্রবেশ
করে। তখন পানি সেচ দিয়ে বের করতে করতে রাত পোহায়।
মহিলা সরকারি কলেজ
রোডের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম জানান, পড়ালেখার প্রয়োজনে মেসে থাকতে হচ্ছে।
মেসটি নিচ তলায় হওয়ায় হালকা ভারী বৃষ্টিতেই বাসায় পানি ঢুকে পড়ে। ডুবিয়ে
যায় রাস্তাসহ প্রবেশ পথ। মেসে থাকা নিয়ে প্রায় সময় পানির সঙ্গে যুদ্ধ করতে
হয়। পড়নে হয় চরম দুর্ভোগে।
শিক্ষাবোর্ড এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন
বলেন, কুমিল্লায় বৃষ্টি হলেই বাসা বাড়ীতে পানি উঠে যাওয়া এখন অভ্যাসে পরিবত
হয়েছে। আজকের বৃষ্টিতে আমরা খুব বিপদে আছি। ঘরের সোফা, খাট পর্যন্ত পানি
উঠেছে।
কুমিল্লা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন
ভূইয়া জানান, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
পাশাপাশি সাগরে লঘুচাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রবিবার রাতে টানা ৩ ঘন্টায়
১০৬ মিঃমিঃ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।