তানভীর দিপু:
নির্জনতা
ভেঙ্গে আবারো সরব হবে ক্যাম্পাস। ক্লাশরুমের পরিচিত পরিবেশে ফিরবে শিশু
কিশোর তরুণরা। কবে আবারো দেখা পাওয়া যাবে আদরের ছাত্র-ছাত্রীদের-শিক্ষকদের
এমন অপেক্ষার যেন শেষ হচ্ছিলো না। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর রোববার থেকে
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে
দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তে আছে সরকার- এমন সিদ্ধান্তের পর যেন হাফ ছেড়ে
বেঁচেছেন সবাই। আবারো শুরু হবে পড়াশুনা-খেলাধুলা। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
ক্লাশরুম- টুল টেবিল ধুঁয়েমুছে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ঘাস-আগাছা কেটে খেলার
খেলাধুলা আর মুক্ত বিচরণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে মাঠ ও আঙিনা। তবে
করোনা স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সতর্ক অবস্থানের কথা জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা
বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা
জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে দুই হাজার ১০৬টি, কিন্ডার গার্ডেন
রয়েছে দুই হাজার ১৭৬টি। মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬০৫টি ও উচ্চ মাধ্যমিক
বিদ্যালয় রয়েছে ১৬২ টি। এছাড়াও জেলায় সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ১৬২ টি কলেজ
রয়েছে।
নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা
রোকসানা ফেরদৌস মজুমদার বলেন, স্কুল খোলা হবে তাই সকল শিক্ষদের নিয়ে
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। এখন ডেঙ্গুর প্রকোপ তাই
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর স্কুল খুলবে
তাই অনলাইনে সকল শিক্ষার্থীদের করোনা স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ যাবতীয়
নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
কুমিল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক
সমিতির সভাপতি ও কাবিলা জুনাব আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান
শিক্ষিকা ফয়জুন্নেছা সীমা বলেন, বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা থেকে শুরু করে শ্রেনী
কক্ষ সম্পূন্ন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। আনা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা
মাপার যন্ত্র, মাস্ক হ্যান্ড স্যানেটাইজার, সাবান। এখন বাকি অপেক্ষা শুধু
কেন্দ্রিয় নির্দেশনার।
মাধ্যমিক শিক্ষা কুমিল্লা অঞ্চলের সহকারি
বিদ্যালয় পরিদর্শক মোহাম্মদ মকবুল হোসেন বলেন, অনেক আগে থেকেই স্কুল খুলবে
বলে শুনা যাচ্ছিলো। যে কারনে আমাদের একাডেমিক কাজ বন্ধ থাকলেও প্রশাসনিক
কাজ নিয়মিত চলে আসছে। শিক্ষকরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসছে। শিক্ষার্ধীদের
এ্যাসাইনমেন্ট দিচ্ছেন ও জমা নিচ্ছেন। যে কারণে ক্লাশ শুরু করার প্রস্তুতি
আগে থেকেই ছিলো।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন,
জেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে দুই হাজার ১০৬টি ও কিন্ডার গার্ডেন
আছে দুই হাজার ১৭৬টি। সকল বিদ্যালয়ে হ্যান্ড স্যানেটাইজার, মাক্স ও
জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে খোলার পর সরকারি
নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পাঠদানে আমাদের সকল প্রস্তুতি নেওয়া
হয়েছে।
জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল মজিদ বলেন, জেলায় মোট ৬০৫ টি
মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে ৩৪টি। তিনি আরো
বলেন ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খুলছে তাই আমরা প্রতিটি উপজেলা শিক্ষা
অফিসারদের সাথে সভা করছি। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধানরাও আমাদের সাথে জুম
মিটিং এ যুক্ত হচ্ছেন। বিদ্যালয় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নকরাসহ শিক্ষাথীদের
পাঠদানের জন্য সুন্দর পরিবেশ তৈরী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া
স্বাস্থ্য বিধিমানাসহ মন্ত্রনালয় থেকে যে নির্দেশনা আসবে তা পরিপালন করা
হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা (মাউসি) কুমিল্লা অঞ্চলের
পরিচালক প্রফেসর সৌমেশ কর চৌধুরী বলেন, জেলায় সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ১৬২
টি কলেজ রয়েছে। এ কলেজগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, হাত ধোয়র পানি সাবান
ও স্যানেটাইজার রাখা, শরীরের তাপমাত্রার যন্ত্র রাখা, পাঁচ ফুট ব্যাঞ্চে
একজন ও এর বেশি হলে দুপাশে দুজন বসাসহ যাবতীয় নির্দেশনা আগ থেকেই দেওয়া
আছে। তাছাড়া মাউসি থেকে দু’ এক দিনের মধ্যে নির্দেশনা আসবে । যে নির্দেশনা
আসবে সে আলোকে বিদ্যালয় পরিচালনা করা হবে।