কুমিল্লা পল্লী চিকিৎসক ও স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা, পুত্রবধুসহ আটক ২
তানভীর দিপু:
Published : Monday, 6 September, 2021 at 11:46 AM
কুমিল্লা সদর উপজেলার সুবর্নপুর গ্রামে এক পল্লী চিকিৎসক ও তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রবিবার মধ্যরাতে সুবর্নপুর এলাকার মীরবাড়িতে এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন বিল্লাল হোসেন (৬৫) ও তার স্ত্রী সফুরা বেগম (৫৫)। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে পল্লী চিকিৎসকের বড় ছেলে প্রবাসী আমান উল্যাহর স্ত্রী শিউলিসহ দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, হত্যার সাথে পারিবারিক কলহ কিংবা ডাকাতির সূত্র যা-ই থাকুক না কেন দ্রুতই তদন্তে বেরিয়ে আসবে। মরদেহগুলো কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় রাখা হয়েছে, ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।নিহতদের মেয়ে বিলকিস জানান, খবর পেয়ে বাড়ি এসে কথা বলে জানতে পারি -রবিবার মধ্যরাতে বৃষ্টির সময় ৭-৮ জন দুর্বৃত্ত চিকিৎসক ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা আমার বাবা ও মায়ের হাত-পা বেঁধে মূল্যবান জিনিস ও স্টাম্পসহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের খোঁজ করে। ধারনা করছি, সেগুলো না দেওয়ায় শ্বাসরোধে তাদেরকে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
তিনি আরো জানান, আমাদের ধারনা আমার ভাইয়ের স্ত্রী শিউলি এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে। গত রমজানে বাবা মায়ের সাথে শিউলির পারিবারিক কলহের ঘটনা ঘটে। সে সময় তার সাথে কিছু বিষয়ে চুক্তি স্টাম্পে লেখা হয়। সেসব স্টাম্পের জন্য কিংবা মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিতেই হত্যাকান্ড। তবে এ খুনের ঘটনায় কারা জড়িত তা বের করবে পুলিশ। আমি হত্যাকারীদের দ্রুত শাস্তি চাই। ফাঁসি চাই। নিহত চিকিৎসকের ভাই সুলতান আহমেদ জানান, রাত আনুমানিক ১২ টায় আমার ভাতিজা বউ শিউলি আমাদের ঘরের সামনে এসে ডাকাডাকি শুরু করে। সে জানায় তাদের ঘরে ডাকাত ঢুকেছে। আমরা দৌড়ে গিয়ে দেখি- বিল্লাল ভাইকে সোফার সাথে হাত পিছনের দিকে দিয়ে বাঁধা। তার গায়ের উপর হাত পা বাঁধা অবস্থায় ভাবীও পরে আছে।ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে কোতয়ালী মডেল থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারনা করা হচ্ছে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে তাদের। পুলিশসহ পিবিআই ও সিআইডি টিম বিষয়টি তদন্ত করছে।
সুবর্নপুর এলাকার এই চিকিৎসক ও তার স্ত্রী হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করেছে প্রতিবেশী ও স্বজনরা। ৫নং পাঁচথুবী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও সুবর্নপুর এলাকার বাসিন্দা মোতাহের হোসেন বলেন, চিকিৎসক বিল্লাল হোসেন একজন স্বজ্জন লোক ছিলেন। তার কারো সাথে দ্বন্দ ছিলো না বলেই জানি। তারপরও যারাই তাদের হত্যা করেছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবী করছি।কুমিল্লা সদর সার্কেল এএসপি মোঃ সোহান সরকার জানান, প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে তাদেরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের শরীরে আঘোতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই জনকে আটক করা হয়েছে।নিহত বিল্লাল হোসেন ও সফুরা বেগমের দুই মেয়ে বিলকিস ও বিনু স্বামীর বাড়িতেই থাকেন। খবর পেয়ে বাবার বাড়িতে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তারা। কান্নাকন্ঠে বিল্লাল হোসেনের ছোট মেয়ে বিনু আক্তার জানান, প্রশাসনের কাছে জোর দাবী আমার বাবা মায়ের হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।