নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে আরও ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত ১১ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম। এই ৫৬ জনের মধ্যে ৩৭ জনই নারী, বাকি ১৯ জন পুরুষ। মহামারীর দেড় বছরে কোভিডে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় পুরুষের চেয়ে দ্বিগুণ নারীর মৃত্যু আর কখনও দেখতে হয়নি বাংলাদেশকে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৬৫ শতাংশই পুরুষ। কিন্তু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের পর অগাস্ট মাস থেকে নারীর মৃত্যুহার বেড়ে গেছে।
এর আগে সর্বশেষ ১৮ জুন ৫৬ জনের কম মৃত্যুর খবর এসেছিল। সেদিন ৫৪ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত এক দিনে মারা যাওয়া ৫৬ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে হল ২৬ হাজার ৬৮৪ জন।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সোয়া ২৭ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে দেশে আরও ২ হাজার ৬৩৯ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৫ লাখ ১৯ হাজার ৮০৫ জনে।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগের ২৪ ঘণ্টায় মোট ২ হাজার ৭১০ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল, মৃত্যু হয়েছিল ৬৫ জনের। সে হিসেবে গত এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আর মৃত্যু- দুটোই কমেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ, যা আগের দিন ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ ছিল।
গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ১ হাজার ৫৫৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে যা দিনের মোট আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি।
যে ৫৬ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ২০ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ৫ হাজার ৫৬৭ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭৫৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে সবচেয়ে বাজে সময়টা পার করে এসে ৩১ অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ অগাস্ট তা ২৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৫ লাখ ৭৪ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২২ কোটি ১০ লাখের বেশি রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ২৭ হাজার ২৩৩ টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৮৪৩টি নমুনা।
এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ; মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ; মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৫ জন, রাজশাহী বিভাগের ৩ জন, খুলনা বিভাগের ৬ জন, বরিশাল বিভাগের ৪ জন, সিলেট বিভাগের ৫ জন, রংপুর বিভাগের ২ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন ১ জন।
গত একদিনে মারা যাওয়া ৫৬ জনের মধ্যে ২৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ২০ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের মধ্যে ৪৩ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ১১ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এছাড়া ১ বাসায় মারা গেছেন ও ১ জন হাসপাতালে আনার পথে মারা গেছেন।