ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভরতা থাকতে হবে
Published : Thursday, 16 September, 2021 at 12:00 AM
নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভরতা থাকতে হবেকরোনাভাইরাস সংক্রমণে গত দেড় বছরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিক্ষা খাত। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হতে পারেনি। সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পরের ক্লাসে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সেশনজটে পড়তে হয়েছে। গত বছরের মার্চের মাঝামাঝি সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়েছিল। টেলিভিশনেও ক্লাস নেওয়া হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রেও এসেছে পরিবর্তন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা কার্যক্রমকে আরো সময়োপযোগী করে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, অগ্রসরমাণ বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সে জন্য শিক্ষা কার্যক্রমকে সময়োপযোগী করা একান্ত অপরিহার্য।
শিক্ষার ক্ষেত্রে এখনকার যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কিভাবে শিক্ষাব্যবস্থাটাকে শিক্ষার্থীদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করা যায়, সেটাই এখন প্রধান বিবেচনার বিষয় হওয়া উচিত। সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই শিক্ষাক্রম অনুমোদন দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের জন্য আনন্দঘন শিক্ষা নিশ্চিত করতে এই শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে। এই শিক্ষাক্রম পরীক্ষামূলকভাবে ১০০টি প্রাথমিক ও ১০০টি মাধ্যমিক স্কুলে আগামী বছর থেকে শুরু করা হবে। ২০২৩ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। ২০২৪ সালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণি এই শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণি যুক্ত হবে। ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণি যুক্ত হবে। এ নিয়ে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, নতুন রূপরেখায় প্রাথমিকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকছে না। চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়তে হবে আটটি বই। তবে সব শ্রেণিতেই শিখনকালীন মূল্যায়নেই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। বর্তমান পদ্ধতিতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা থাকছে না। মাধ্যমিক পর্যন্ত থাকছে না কোনো বিভাগ বিভাজন। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির সবাইকে পড়তে হবে ১০টি বিষয়। দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ওপরই অনুষ্ঠিত হবে এসএসসি পরীক্ষা। একাদশ শ্রেণিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভাগ পছন্দ করতে হবে। একাদশ শ্রেণি এবং দ্বাদশ শ্রেণি শেষে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই দুই পরীক্ষার ফলাফলের সমন্বয়ে তৈরি হবে এইচএসসির ফল। রূপরেখা অনুসারে ২০২৪ সাল থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বিভাগ বিভাজন উঠে যাচ্ছে। ২০২৪ সাল থেকে নবম শ্রেণির এবং ২০২৫ সাল থেকে দশম শ্রেণির বিভাগ বিভাজন উঠছে। আর ২০২৪ সাল থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন কারিকুলাম অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রম অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। তবে এটিকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন বাস্তবায়নযোগ্য একটি আধুনিক কারিকুলাম। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে বাস্তবায়নযোগ্য একটি কারিকুলাম প্রণয়ন করা হবে, এটিই আমাদের প্রত্যাশা। এই কারিকুলাম তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর হতে হবে। পরীক্ষার ভারমুক্ত আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা জাতিকে মেধাসম্পন্ন প্রজন্ম উপহার দেবে।