ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
প্রতিবন্ধী দম্পতির পাশে দাঁড়াবে কে?
Published : Thursday, 16 September, 2021 at 12:00 AM
আলমগীর হোসেন,দাউদকান্দি।।
মেয়েটির জন্মের পরপরই মা মারা যান। এর একযুগ পর বাবাকে হারান তিনি। এখন পরিবারে তার ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন কেউ নেই। কিন্তু বয়সতো আর থেমে নেই। মেয়েটি এখন বড় হয়েছে। বিয়ে করেছেন জন্মপরিচয় না থাকা এক প্রতিবন্ধী যুবককে। থাকেন তার পৈত্রিক ছোট্ট একটি ভিটায়। সংসার চালাতে তারা করেছেন ভিক্ষা।
ওই মেয়েটির নাম ছালমা আক্তার (৩০)। তার বাড়ি কুমিল্লা দাউদকান্দি উপজেলার দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত ওহাব মিয়া। ওহাব মিয়া মারা যাওয়ার পর ছালমা একা হয়ে যান। মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে জীবন বাঁচিয়েছেন। কিন্তু বাবা-মার আদর এবং ঠিকমতো খাবার না পাওয়ায় তিনিও মানুষিকভাবে অসুস্থ। এলাকার মানুষ ছালমাকে মানুষিক প্রতিবন্ধী হিসেবেই চিনে।
সম্প্রতি মোহাম্মদপুর গ্রামে কথা হয় ছালমার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার কোনো ভাই-বোন নেই। মানুষের সাহায্য আর সহযোগিতায় নিয়ে অনেক কষ্টে জীবনযাপন করি। কয়েক বছর আগে রাস্তায় পরিচয় হওয়া শাহাজাহানকে বিয়ে করি। স্বামীর কোন জন্ম পরিচয় নেই, আমার বাপের ভিটায় ছোট একটা কুড়ে ঘড়ে থাকি । আমরা দুইজন  হাটে বাজারে পাড়া মহল্লায় ভিক্ষা করে খাই। কোন দিন ৫০  টাকা, কোন দিন ১০০ টাকা পাই, দুইজনেই প্রতিবন্ধি মানুষ। সরকারি কোন অনুদান কোন আর্থিক সহযোগি পাই না। আমাদের খোজ খবর নেওয়ার মত কেউ নেই, অনেক  অনাহারে কাটাতে হয় আমাদের জীবন। তিনি বলেন, কিছুদিন হয় আমাদের একটি কন্যা সন্তান হয়েছে। অন্যদিকে আমার স্বামী অনেক দিন যাবত অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে রয়েছে। ভিক্ষা করতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যেতে পাড়ে না। অথচ ঘরে ভাত নেই। বৃষ্টি আসলে ঘড়ে পানি পরে, থাকা খাওয়া নিয়ে  অনেক করুন অবস্তায়  জীবন জাপন করতে হচ্ছে আমাদের।
ছালমার স্বামী শাহজাহান বলেন, আমরা প্রতিবন্ধি মানুষ। সমাজের তেমন কেউ আমাদের সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে না। সরকার কতো মানুষকে ঘর, টিউবওয়েল ও আর্থিক সাহায্য করে, কিন্তু আমারা তা পাই না। সরকারের কাছে আমরা ভিক্ষা চাই। আমাদেরকে যাতে সরকার সহায়তা করে। আমরা সুন্দর করে জীবন যাপন করতে চাই।
মোহাম্মদপুরের বাসিন্দারা জানান, ছালমা অসহায় আমরা দিলে খায়, নয়তো না খেয়ে জীবন যাপন করতে হয়। সরকারের কাছে আমাদের এলাকাবাসির দাবি, ছালমাকে একটি ঘর একটি টিউবওয়েল ও কিছু আর্থিক  সহায়তা প্রদান হোক। এতে ছালমা করুন অবস্থা থেকে মুক্তি পাবে।  
দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল ইসলাম খান বলেন, এই প্রতিবন্ধী দম্পতিকে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে  সার্বিকভাবে সহায়তা করবো।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বরাদ্দ সাপেক্ষে দাউদকান্দি  উপজেলায়  উন্নয়নমূলক কাজ অব্যাহত আছে। সরকারি ঘর, আর্থিক অনুদান, খাদ্যসামগ্রীসহ বিভিন্ন সহায়তা প্রাপ্যদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। এখানে অসহায় ছালমা আক্তারের জন্যও কিছু একটা করার চেষ্টা  অতি শিগগির করা হবে।