স্থানীয় লোকজন বেশ ঘটা করেই বিয়ে দিয়েছেন যশোর সদরের নরেন্দ্রপুর পোস্ট অফিস এলাকার আকবার আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম এবং পাশের আন্দুলিয়া গ্রামের নাজির মোল্লার মেয়ে ময়না খাতুনের। তবে তারা দুজনই খর্বাকৃতির। বরের উচ্চতা তিন ফুট এবং কনের উচ্চতাও প্রায় তিন ফুট। গত ১৭ সেপ্টেম্বর বেশ ধুমধাম করে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
রবিবার তাদের ফিরানি (বিয়ের পর মেয়েকে বাবার বাড়িতে নেওয়া) হবে। সে কারণে মেয়েপক্ষ একটি ঘোড়ার গাড়ি সাজিয়ে অন্যরকমভাবে নিয়ে যাওয়ার জন্যে আয়োজন করেছে। নরেন্দ্রপুর পোস্ট অফিসপাড়া ও আন্দুলিয়া গ্রামের দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার।
নরেন্দ্রপুর পোস্ট অফিস এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী মোতাহার হোসেন বুলবুল বলেন, ‘রবিউলের বাবা নেই। মা অন্য জায়গায় বিয়ে করে চলে গেছেন। রবিউল থাকতো খালু জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে।’
তিনি বলেন, ‘দু’পক্ষের অভিভাবকদের সম্মতিতে বিয়ের অনুষ্ঠান করা হয়েছে। বরযাত্রী হিসেবে আমরা দুটি মাইক্রোবাস আর ২০টি মোটরসাইকেল নিয়ে ৬০ জনের মতো যাই। পরদিন বৌভাতে সেখান থেকে ৪০-৪২ কনে যাত্রীসহ আমরা প্রায় দুইশ’ মানুষের জন্যে আয়োজন করি। সাদাভাতের সঙ্গে গরুর মাংস, খাসির মাংস, ডিম ইত্যাদি ছিল। খাওয়া-দাওয়ায় কোনও সমস্যা হয়নি।’
বরের খালু জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘রবিউলের জন্ম খুবই দরিদ্র পরিবারে। ছোট্ট অবস্থা থেকেই তার বাবা-মা কেউ নেই। আমরাই রবিউলকে মানুষ করেছি। কৃষিকাজ করেই সে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তার বিয়ের বয়স হলেও অনেকদিন ধরে মেয়ে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অবশেষে পাশের আন্দুলিয়া গ্রামে একটি মেয়ে খুঁজে পাই। জানতে পারি, ওই গ্রামের নাজির মোল্লার মেয়েও কম উচ্চতার। স্থানীয় ব্যক্তিদের সার্বিক সহযোগিতায় তাদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।’
বর রবিউল বলেন, ‘আমাদের দুজনের সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে। বিয়ে করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।’ দেশবাসীর কাছে তিনি দোয়া চেয়েছেন।
কনে ময়না বলেন, ‘আমাদের বিয়ে খুব ধুমধামে হয়েছে। অনেক ভালো লাগছে। এভাবে বিয়ে হবে কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি। বিয়েতে আসা দু’পক্ষই অনেক আনন্দ করেছে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন সবাই।’
যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুজিত বিশ্বাস জানান, বর রবিউল ইসলামের বয়স ২৬ বছর, কনে ময়না খাতুনের ৩৬ বছর। এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় বিয়ের গেট সাজিয়ে, প্যান্ডেল নির্মাণ করে ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসলামিক শরিয়াহ অনুযায়ী সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে এক হাজার এক টাকার কাবিনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।