নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১৯০ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর শনিবার দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দিনে এত এত কম রোগী শনাক্ত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে বিপর্যয় নেমে আসার পর আর দেখা যায়নি। এর চেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত ২৯ মে, ১ হাজার ৪৩ জন। তারপর থেকে সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
নতুন শনাক্তদের নিয়ে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। তাদের নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ১৮২।
গত এক দিনে সেরে উঠেছে ১ হাজার ৬৪৫ জন, তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠল ১৪ লাখ ৯৮ হাজার ৬৫৪ জন। এই হিসাবে দেশে বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা মাত্র ১৫ হাজার ৪৬৪। অর্থাৎ দেশে এখন এই সংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাস সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। অ্থচ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটে জুলাই-অগাস্ট জুড়ে দৈনিক সক্রিয় রোগীর সংখ্যা লাখের উপরও উঠেছিল।
দৈনিক শনাক্তের হারও কমেছে। শনিবার নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার দাঁড়ায় ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ, যা আগেরদিন ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ১৯ হাজার ৬৬৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৩টি নমুনা।
এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ; মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ৬৭৬ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের প্রায় অর্ধেক। আর এর ৫৩৩ জনই ঢাকা জেলার।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। আর প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছিল তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ।
গত বছরের শেষ দিকটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও করোনাভাইরাসের ডেল্টা সংক্রমণের বিস্তারে এ বছরের এপ্রিল থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। এর মধ্যে জুলাই, অগাস্ট ভয়াবহ অবস্থা পার করে বাংলাদেশ।
২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট দুদিনই ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
ভয়াল অগাস্ট পেরিয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমছে সেপ্টেম্বরে, যে কারণে দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও খুলেছে।
দৈনিক শনাক্ত রোগী কমে আসায় সংক্রমণের হারও আসছে কমে। দৈনিক সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে তা অন্তত দুই সপ্তাহ থাকলে মহামারী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে ধরে নেন বিশেষজ্ঞরা।
গত এক দিনে ঢাকা ছাড়া কোনো জেলায় শতাধিক রোগী শনাক্ত হয়নি। অর্ধ শতাধিক রোগী শনাক্ত হয়েছে শুধু দিনাজপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার জেলায়। গত একদিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৯ জন এবং চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ জন।
এছাড়া রাজশাহী বিভাগের ৩ জন, খুলনা বিভাগের ৩ জন, বরিশাল বিভাগের ১ জন, সিলেট বিভাগের ২ জন এবং রংপুর বিভাগের ১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা বেশি। এদিন নারী মারা গেছে ১৯ জন, পুরুষ ১৬ জন।
মৃতদের ২০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ২৭ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ৮ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।