করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে অক্টোবর মাস থেকে আবার গণটিকা কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা করেছে সরকার। এ লক্ষ্যে আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতি মাসে প্রায় ২ কোটি টিকা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে অধিদপ্তর। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) এসব তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।
তিনি বলেন, ‘দুই-চার দিনের মধ্যে জানাতে পারব, কবে থেকে এই টিকা কার্যক্রম শুরু করা হবে। আপাতত নির্দিষ্ট কোনো তারিখ বলতে পারছি না। কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে তো এখন ক্লাস শুরু হয়েছে। স্কুলগুলোতে আমরা একসঙ্গে অনেক মানুষকে টিকা দিতে পারতাম। এখন আমাদেরকে বিকল্প ব্যবস্থা করেই টিকার দেওয়ার কাজ শুরু করতে হবে।'
খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিকল্প বড় জায়গা খুঁজতে শুরু করেছি। সারা দেশেই সে জায়গা খুঁজে বের করতে হবে। কোন উপজেলায় বড় অডিটোরিয়াম আছে, কোথায় খোলা জায়গা আছে, আমরা খুঁজতে শুরু করেছি। আশা করছি, ২-৪ দিনের মধ্যেই আমরা টিকা কেন্দ্র নির্ধারণ করতে পারব।’
এবার সারা দেশে কোন টিকা দেওয়া হবে, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আগের মতো এবারও সিনোফার্মের টিকাই দেওয়া হবে। আগে সিটি করপোরেশন এলাকাগুলোতে মডার্নার টিকা দেওয়া হলেও এবার সেগুলোতেও সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হতে পারে।’
এর আগে রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এক ভিডিও বার্তায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, ‘সরকারের হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকা আছে। আমরা সামনের দিনগুলোতে প্রয়োজনীয় টিকা পাওয়ার উৎস নিশ্চিত করেছি।'
স্পট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে টিকা প্রয়োগের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সপ্তাহের নির্দিষ্ট এক দিন নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্পট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।'
খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি, ষাটোর্ধ্ব মানুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে এবং তাদের মৃত্যুর হার বেশি। এটা মাথায় রেখেই আমরা নতুন করে টিকাদান পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। টিকা দেওয়ার সময় মাথায় রাখব, যারা বয়স্ক তারা যেন অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই টিকা পান।'
টিকার পর্যাপ্ত মজুত থাকলেও এসএমএস পাঠাতে দেরি কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘এক কেন্দ্রে দৈনিক ২০০ জনের টিকা দেওয়ার সক্ষমতা থাকলেও নিবন্ধন করেছে ১ হাজারের বেশি মানুষ। সেক্ষেত্রে এসএমএস আসতে একটু দেরি হচ্ছে। সেই সঙ্গে টিকা নিবন্ধনের বয়স কমিয়ে আনার পর থেকেই ব্যাপক হারে টিকার নিবন্ধন করছে মানুষ। নিবন্ধনের তালিকা অনেক লম্বা ছিল, এখন এটি আস্তে আস্তে কমে আসছে। একটু দেরি হলেও সবাই টিকা পাবেন।’
এর আগে, গত ৭ আগস্ট দেশে করোনা প্রতিরোধে গ্রামে গ্রামে টিকাদান ক্যাম্পেইন করা হয়েছিল। সে সময়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ টিকা পেতে নিবন্ধন করেন। সরকারের পরিকল্পনা ছিল এক সপ্তাহে ১ কোটি টিকা দেওয়ার। কিন্তু টিকার মজুত সীমিত থাকায় সে সময় তা সম্ভব হয়নি।