ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
বিলুপ্তির পথে দেশীয় প্রজাতির মাছ
Published : Wednesday, 22 September, 2021 at 12:00 AM, Update: 22.09.2021 1:12:18 AM
বিলুপ্তির পথে দেশীয় প্রজাতির মাছইসমাইল নয়ন।।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নদী, খাল, বিল ও ডোবা-জলাশয় থেকে দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। প্রায় ছোট-বড় অনেক প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে।
কৃষিজমিতে অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশক ও অবৈধ কারেন্ট জালের ব্যবহার, খাল-বিল-ডোবা ভরাট, উন্মুক্ত জলাশয়ে সেচে ও বাঁধ নির্মাণসহ মাছের বিচরণক্ষেত্রের প্রতিকুল পরিবর্তনের কারণে এরকম বিপর্যয় ঘটছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এক যুগ আগেও এ অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় দেশীয় মাছ পাওয়া গেলেও বর্তমানে এসব মাছের অনেক প্রজাতিই বিলুপ্তির পথে।
মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় নদীর শাখা, গাঙ, খাল ও সরকারি খালসহ বেশ কিছু নদী ও ছোট খাল-বিল মাছের প্রধান উৎস। এসব জলাশয়ের মাছ এলাকার চাহিদা মিটাতো।
একসময় জলাভূমিতে দেশীয় মাছের প্রাচুর্য ছিল। কিন্তু এখন বেশ কিছু প্রজাতির মাছ তেমন দেখা যায় না। দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্তির কারণে স্থানীয় জেলেদের দুর্দিন যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, বর্ষা মৌসুমে মা মাছগুলো ডিম ছাড়ে। ওই সময় এক শ্রেণির মৎস্য শিকারি এগুলো ধরে ফেলে। এতে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন হয় না। তা ছাড়া কতিপয় মাছ চাষি বিভিন্ন দিঘি, পুকুর ইত্যাদি জলাশয় ইজারা নিয়ে বা ফসলি জমিতে মাছের ঘের তৈরি করে। এসব জলাশয় ও ঘের ফিল্টারিংয়ের নামে হিলটন নামের ওষুধসহ বিভিন্ন রাসায়নিকদ্রব্য ব্যবহার করে দেশীয় প্রজাতির মাছ ধ্বংস করে ফেলছে। এ ছাড়া কৃষিজমি থেকে রাসায়নিক পদার্থ বর্ষার সময় জলাশয়ে পড়ে পানি দূষিত করছে। ফলে দেশি প্রজাতির মাছ দিন দিন কমে অনেকটা বিলুপ্তির পথে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে যত্রতত্র ফসলি জমি ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করে জলাধার সংকোচনকেও দেশীয় মাছ বিলুপ্তির আরেক কারণ বলে মনে করছেন অনেকে।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানায়, আগে দেশীয় প্রজাতির যেসব মাছ দেখা যেত, তার অনেকটা এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্ত প্রজাতির মাছের মধ্যে রয়েছে গুতুম, নানদিয়া, রিটা, বাচা, ছেনুয়া, গাওড়া, নাপতিনী, বুইতা ইত্যাদি।
এ ছাড়া বাঘাইড়, গোলসা, পাবদা, আইড়, নামাচান্দা, তারা বাইম, বড় বাইম, কালবাউশ, দাড়কিনাসহ অনেক প্রজাতির মাছ বিপন্ন প্রায়।
এদিকে জলাশয়-ডোবা ভরাট, খালগুলোতে পানি সেচে ফেলা, অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা, জমিতে কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারসহ মাছের অনুকূল পরিবেশ তৈরি না হওয়ায় অনেক মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয় বণিক এই প্রতিনিধিকে বলেন, এসব বিলুপ্ত প্রজাতি মাছগুলো সংরক্ষণ করতে হলে প্রথমে অবৈধ কারেন্ট জালের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং জেলেদের জালের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। কৃষিজমিতে কীটনাশক ব্যবহার সীমিত করতে হবে। এতে করে এসব মাছ বিলুপ্ত হওয়া থেকে রক্ষা করা যাবে।