Published : Monday, 27 September, 2021 at 12:00 AM, Update: 27.09.2021 1:13:50 AM
মো. হাবিবুর রহমান :
কুমিল্লার
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০২০-২১ অর্থ বছরে কোভিড-১৯
প্রশিক্ষণের নামে ৫৩ লাখ ৯৪ হাজার ৬'শ ৯৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া
গেছে। অভিযোগে প্রমাণাদি সংযুক্ত করে স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন দফতরসহ
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবর চিঠি চালাচালি করেছেন ওই হাসপাতালে কর্মরত
মাঠকর্মীরা। সংশ্লিষ্ট বিল-ভাউচার ও কাগজপত্রে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার
পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: নাজমুল আলম, প্রধান সহকারী শাহ আলম ও ইপিআই
টেকনিশিয়ান নিজাম উদ্দিন মজুমদার এ ৩ জনের সীল স্বাক্ষর রয়েছে।
অভিযোগ
সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা ২২টি ইউনিয়নের ৬৬টি ওয়ার্ডের
জন্য প্রায় ৩৪ লাখ ২ হাজার ৮শ টাকা বরাদ্দ পায়। ওই বরাদ্দ বিবরণীতে বলা হয়,
প্রতিটি ইউনিয়নে ১টি করে উপজেলা সদরের ৩টিসহ মোট ২৫টি দল টিকাদানকারী
হিসেবে প্রশিক্ষণ শেষে কাজ শুরু করবেন। কিন্তু এখানে কোন প্রশিক্ষণ না
দিয়েই টিকাদানকারী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিকট থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এই মর্মে
স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বোপরি আরো অন্যান্য
খাত মিলিয়ে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০২০-২১ অর্থ বছরে
কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি, এমআর ক্যাম্পেইনসহ অন্যান্য প্রশিক্ষণের জন্য
৫৩ লক্ষ ৯৪ হাজার ৬শ’ ৭০ টাকা বরাদ্দ আসে। ওই টাকা খরচ দেখিয়ে উত্তোলন
করেছেন ওই ৩ কর্তা। ফলে হাসপাতালে কর্মরত নার্স, স্বাস্থ্য সহকারী,
স্বেচ্ছাসেবকরা করোনাকালে সম্মুখ যোদ্ধা হয়ে ঘামঝরা পরিশ্রম করলেও
প্রশিক্ষণের ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এতে করে তাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার
হয়েছে। প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কেউ মুখ না খুললেও একসাথে ৫৪ জন মাঠকর্মীর
স্বাক্ষরিত কাগজ অভিযোগের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে।
অভিযোগে আরো উল্লেখ
করেছেন, প্রধান সহকারী শাহ আলম অদৃশ্য ক্ষমতা বলে গত ১৩ বছর যাবত এ
হাসপাতালে আছেন। তিনি ডাক্তার, নার্স, মাঠ পর্যােিয়র কর্মচারীসহ যারাই
মাতৃত্বকালীন ছুটি ও যোগদান, বদলী ফরোয়াডিং, টাইমস্কেল বিলে অফিসিয়াল কাজে
গেলে তাকে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। মাসে মাসে মোটা অংকের টাকার
বিনিময়ে কমপ্লেক্সের আয়া রহিমা বেগম ৮ বছর যাবত কর্মস্থলে না এসেই বেতন
ভাতা উত্তোলন করছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইপিআই টেকনিশিয়ান নিজাম উদ্দিন
মজুমদারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা,
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ইউএইচও) নাজমুল আলম স্যারের সাথে যোগাযোগ
করেন। তিনিই সব বলতে পারবেন।
অপর অভিযুক্ত প্রধান সহকারী শাহ আলম বলেন,
হাসপাতালের টাকা আত্মসাতের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাছাড়া কেউ এ
বিষয়ে আমার কাছ থেকে কিছুই জানতে চায়নি।
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও
পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: নাজমুল আলম বলেন, কোন প্রকার দূর্নীতির
বিষয়ে আমার জানা নেই। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাচ্ছি হাসপাতালের দু’জন
কর্মচারীর বিরুদ্ধে নাকি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ হয়েছে। এর বেশী কিছু বলতে
পারব না।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসেন দৈনিক
কুমিল্লার কাগজকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই এখন
কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।