Published : Monday, 27 September, 2021 at 12:00 AM, Update: 27.09.2021 1:14:19 AM

তানভীর দিপু:
স্কুল
খোলার পর দুই সপ্তাহ তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, কুমিল্লা জেলায় এখনো
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে গড়ে ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকছে। এর
মধ্যে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের হার ৯০ শতাংশের উপরে থাকলেও প্রথম থেকে
চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির হার বেশি। অন্যদিকে জেলায় ১
হাজার ৯ শ ৭টি কিন্ডারগার্টেনের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ২ শ ১১টি
কিন্ডারগার্টেন। এসব কিন্ডার গার্টেন যদি আর না খুলে তাহলে তাদের
শিক্ষার্থীদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপআনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের
আওয়তায় এনে আবারো স্কুলে ফিরিয়ে আনার কথা জানিয়েছে জেলা শিক্ষা বিভাগ।
জেলা
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে
পঞ্চম শ্রেণী বাদে অন্যান্য ক্লাশে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার আনুমানিক ৮৫
শতাংশ। পঞ্চম শ্রেণীতে উপস্থিতির সংখ্যা বেশি। প্রতিদিনই প্রতিটি স্কুল
থেকে উপস্থিতির সংখ্যা এবং অনুপস্থিতির সংখ্যা লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। যারাই
আসছে না তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। কেন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই
সেই বিষয়ে জানানোর জন্য শিক্ষকদের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো
বলেন, প্রাথমিকে বাল্য বিবাহের ঘটনা তেমন নেই। ঝরে পরা কিংবা অসুস্থতার
কারণে এই অনুপস্থিতি হতে পারে। উপজেলাগুলোর মধ্যে মেঘনা উপজেলাসহ প্রত্যন্ত
উপজেলার স্কুলগুলো পিছিয়ে আছে। এ বিষয়গুলো বিশেষভাবে নজরদারি করা হচ্ছে।
জেলা
প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সূত্র মতে, গতকাল ২৬ সেপ্টেম্বর একদিনে কুমিল্লা
সদর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে তৃতীয় শ্রেণীতে ৬ হাজার ৭ শ ২৬ জন
শিক্ষার্থীর বিপরীতে উপস্থিত ছিলেন ৪ হাজার ৫ শ ৪২ জন। অর্থাৎ উপজেলাটির
তৃতীয় শ্রেনীর প্রায় ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাশে আসেনি। অপর দিকে পঞ্চম
শ্রেণীর ৬ হাজার ৪ শ ৯ জন শিক্ষার্থী বিপরীতে উপস্থিত ছিলেন ৪ হাজার ৬ শ ১৮
জন। ক্লাশে আসেনি প্রায় ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী।
চলতি বছরের জুলাই
মাসের তথ্য অনুসারে, কুমিল্লা জেলায় প্রাথমিকে গমন উপযোগী শিক্ষার্থীর
সংখ্যা ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯০৫ জন, যার মধ্যে ভর্তি হয়েছিলো ৮ লাখ ৮১ হাজার
৪৩৯। জেলায় মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২ হাজার ১০৬ টি। প্রতিটি
স্কুলের প্রতিটি শিফটে এবং ক্লাশে প্রতিদিন কি পরিমান ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত
থাকছে সে বিষয়ে প্রতিদিনই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা
কর্মকর্তা আবদুল মান্নান আরো জানান, ঝরে পরা বা অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল
পরিবারের শিক্ষার্থীদেরকেও আবারো স্কুলে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকার কঠোর
পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। শুধু স্কুলের শিক্ষকরাই নয়, অভিভাবকদেরও এই বিষয়ে
সচেতন হতে হবে। যাদের কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে সেসব
শিক্ষার্থীদেরকেও দ্বিতীয় সুযোগ দেয়া হবে। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো,
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন কর্মসূচির
আওতায় শিক্ষার্থীদের আবারো শিক্ষা জীবনে ফিরিয়ে আনা হবে।