লিভারপুল সমর্থকদের কাছে তিনি ছিলেন ‘স্যার রজার’। ইয়ান রাশ সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে বসার আগে তিনিই ছিলেন শীর্ষে। তবে লিগে অলরেডদের সর্বোচ্চ গোলের জায়গাটা আজও ধরে রেখেছেন রজার হান্ট। লিভারপুলের এই কিংবদন্তি আর নেই। আজ (মঙ্গলবার) পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে অন্যলোকে পাড়ি জমিয়েছেন ৮৩ বছর বয়সে।
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন হান্ট। বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা এই কিংবদন্তি। মাত্র ২০ বছর বয়সে ১৯৫৮ সালে লিভারপুলে যোগ দিয়েছিলেন এই স্ট্রাইকার। এরপর শুধুই এগিয়ে চলা। সাড়ে ১১ বছর কাটিয়েছেন লিভারপুলে। হয়েছেন ক্লাব কিংবদন্তি। তার ২৪৪ লিগ গোল এখনও লিভারপুল ইতিহাসের সর্বোচ্চ। একসময় সব মিলিয়ে গোলসংখ্যাতেও হান্ট (২৮৫) ছিলেন শীর্ষে। তবে পরবর্তীতে ইয়ান রাশ (৩৪৬) দখল করেন শীর্ষস্থান।
লিভারপুল ইতিহাসের সর্বকালের সেরাদের একজন হান্ট। বিল শ্যাঙ্কলির অধীনে জিতেছেন দুটি লিগ শিরোপা ও একটি এফএ কাপ। সাড়ে ১১ বছরের ক্যারিয়ারে লাল জার্সিতে খেলেছেন ৪৯২ ম্যাচ। ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে লিভারপুলে তার শুরুটা হয়েছিল দ্বিতীয় বিভাগে। ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে শুরু হয় প্রথম বিভাগের মিশন।
আর দ্বিতীয় বিভাগে খেলা সময়ই ১৯৬২ সালে অভিষেক হয় ইংল্যান্ডের জার্সিতে। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের জেতা একমাত্র বিশ্বকাপ দলের অন্যতম সদস্য এই হান্ট। ঘরের মাঠের ওই আসরে ইংল্যান্ডের খেলা ছয় ম্যাচের সবক’টি খেলেছিলেন হান্ট। পেয়েছিলেন ৩ গোল। বিশ্বকাপ জেতা এই কিংবদন্তি সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের জার্সিতে ৩৪ ম্যাচে করেছেন ১৮ গোল।
ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ী হলেও তিনি হয়ে আছেন এবং থাকবেন লিভারপুলের ‘স্যার রজার’ হয়ে। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে লিভারপুর। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘১৯৫৯ সালের সেপ্টেম্বরে অ্যানফিল্ডে স্কানথোর্প ইউনাইটেডের বিপক্ষে ২-০ গোলে জেতা ম্যাচে অভিষেক হয় হান্টের। বিল শ্যাঙ্কলির অধীনে, যিনি যোগ দেন কয়েক মাস পরই, তার সঙ্গে জুটি বেঁধে হান্ট জেতেন ১৯৬২ সালের দ্বিতীয় বিভাগের শিরোপা, ১৯৬৪ ও ১৯৬৬ সালের প্রথম বিভাগের শিরোপা এবং ১৯৬৫ সালে আসে দীর্ঘ অপেক্ষার এফএ কাপের প্রথম শিরোপা।’ পরের অংশে যোগ করা হয়েছে, ‘লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের সবাই ভীষণ মর্মাহত। রজারের পরিবার ও বন্ধুদের এই কঠিন সময়ে পাশে আছে লিভারপুল।’