Published : Thursday, 4 November, 2021 at 12:00 AM, Update: 04.11.2021 12:59:05 AM
নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লায় ধর্ম অবমাননার মামলায় গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনসহ ৪
জনের আরো ৩ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। ১২ দিনের রিমান্ড শেষে তৃতীয়
দফায় আরো ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
তিন দিনের রিমাণ্ড আদেশের পর রিমাণ্ড সময় বাড়ানোর জন্য এবং রিমান্ডের সময়
চেয়ে সিআইডি রিভিউ আবেদন করলে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট১নং
আমলি আদালতের বিজ্ঞ বিচারক চন্দন কান্তি নাথ এ রিভিউ আবেদন নামঞ্জুর
করেন। সিআইডি নতুন করে রিমান্ডে না নেয়ায় কুমিল্লায় ধর্ম অবমাননার মামলায়
গ্রেপ্তার মণ্ডপে কোরআন রাখা ইকবাল, জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ প্রথম কল করা
ইকরাম, দারোগা বাড়ি মাজারের দুই সহকারী খাদেম ফয়সাল ও হুমায়ুনকে কুমিল্লা
কেন্দ্রিয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল দুপুরে ও বিকালে কুমিল্লা চিফ
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের রিমান্ড শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানো
হয়। শুনানি শেষে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার খান মুহম্মদ রেজওয়ান
সাংবাকিদের জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন
করেছিলেন,আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। কিন্তু তিন দিন তাদের কাছ
থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাইয়ের জন্য পর্যাপ্ত নয়, তাই তাদের রিমান্ডে না
নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তথ্য যাচাই বাছাই শেষে যে কোন সময় আবার
প্রয়োজন মত তাদের জন্য রিমান্ড নেয়া হবে। দুই দফায় ১২ দিন রিমান্ড শেষে
গতকাল দুপুর আড়াইটায় কুমিল্লা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-১ এর
বিচারক চন্দন কান্তি নাথ-এর আদালতে ওই চার আসামীকে হাজির করা হয়। বিকেল
চারটায় শুনানি শেষ হয়। এসময় মামলার বিষয়ে কথা বলেন সিআইডি কুমিল্লার বিশেষ
পুলিশ সুপার খান মুহম্মদ রেজওয়ান। তিনি আরো জানান, ১২ দিন রিমান্ড শেষে
আসামীদের কোর্টে উপস্থাপন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ন এবং স্পর্শকাতর যেসব
তথ্য পাওয়া গেছে-এগুলো আরো যাচাই বাছাইয়ের জন্য আরো সময় প্রয়োজন। এগুলো
ম্যানুয়েলি, ডিজিটালি ও ট্যাকনোলজিক্যালি সব ভাবেই যাচাই বাছাই করছি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবেদন করেছিলো ৫ দিনের, কিন্তু ৩ দিনে তো তথ্য
যাচাই বাছাই শেষ হবে না। এই রিমান্ড আমাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। এটা জাতীয়
এবং আন্তর্জাতিক ভাবে সামাজিক গ্রুপ এবং রাজনৈতিক গ্রুপের উপর যাচাই বাছাই
হচ্ছে। এজন্য আরো সময়ের প্রয়োজন। যাচাই বাছাই শেষ হলে আরো রিমান্ডের
প্রয়োজন হলে, তখন আমরা আবার রিমান্ড গ্রহন করবো। এগুলোর যাচাই বাছাই শেষ না
হওয়া পর্যন্ত আমরা নতুন কোন রিমান্ডের আবেদন করছি না। রিমান্ড রিভিউ করার
জন্য আদালতে দরখাস্ত দেয়া হয়েছে। আমরা ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলাম,
আদালত আমাদের ৩ দিনের মঞ্জুরও করেছিলেন। পুলিশ সুপার বলেন, যেহেতু এই
সংশ্লিষ্ট ঘটনায় রাষ্ট্রীয় সংহতি এবং জন নিরাপত্তা বিনষ্ট হয়েছে যা
সন্ত্রাস দমন আইন ২০০৯ এর অন্তর্ভুক্ত। এই বিশেষ দু’টো কারনে এই মামলায়
সন্ত্রাস দমন আইনের ৬, ৭, ১০ এবং ১১ ধারা সংযুক্ত করার আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে ২৩ অক্টোবর আদালতে এই মামলার চার আসামিকে হাজির করে ১০ দিন করে
রিমান্ড চায় পুলিশ, আদালত ৭ দিন করে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।
পরে সিআইডি মামলার ভার পেলে তারা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। দ্বিতীয় দফায়
গত ২৯ অক্টোবর আদালত আবারও ইকবালসহ চার আসামির ৭দিন করে রিমান্ড চায়
সিআইডি, আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা
নগরীর নানুয়া দীঘিরপাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরাআন রাখার ঘটানায় নগরীর কয়েকটি
পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগেরঘটনা ঘটে। পরে পার্শ্ববর্তী জেলা
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, নোয়াখালীর চৌমুহনী, রংপুরেরপীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন
স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশের সংগ্রহকৃত সিসিটিভির
ফুটেজের মাধ্যমে পূজামণ্ডপে কোরআন রাখায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবালকে শনাক্ত
করে পুলিশ। পরে গত ২১ অক্টোবর অভিযুক্ত ইকবালকে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার
করে পুলিশ। ২২ অক্টোবর তাকে কুমিল্লায় আনা হয়।