ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শুক্রবার (৫ নভেম্বর) উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পাকিস্তানের সংসদ। এদিন দেশটির বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতারা প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিয়ে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানান। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগও দাবি করেন তারা।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের তথ্যমতে, অর্থনৈতিক সংকট কাটানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাত থেকে দেশটিতে পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম লিটারপ্রতি প্রায় আট রুপি বাড়িয়েছে ইমরান সরকার। সেখানে পেট্রলের দাম ৮ দশমিক ০৩ রুপি বেড়ে প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ দশমিক ৮২ রুপিতে। ডিজেলের দাম ৮ দশমিক ১৪ রুপি বেড়ে হয়েছে ১৪২ দশমিক ৬২ রুপি। আর কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ৬ দশমিক ২৭ রুপি বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৬ দশমিক ৫৩ রুপিতে।
জ্বালানি তেলের দাম একলাফে এতটা বাড়ানোর প্রতিবাদে সরব হয়েছেন পাকিস্তানের বিরোধী দলীয় রাজনীতিবিদরা। জিও টিভির খবর অনুসারে, শুক্রবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে পিএলএম-এন নেতা খাজা আসিফ ইমরান সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী প্রথমে ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেন এবং তারপরই একটি পেট্রোল বোমা ফেলেন।
এসময় জ্বালানি তেলের অভূতপূর্ব মূল্যবৃদ্ধি দেশটির দরিদ্র মানুষের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে এ নেতা বলেন, জাতীয় সংসদের উচিত বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া।
একই সময় বিরোধী দলীয় বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে এবং দরিদ্রদের সাহায্যে ইমরান খানের ১২ হাজার কোটি রুপির ত্রাণ প্যাকেজকে ভুয়া দাবি করে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন। তাদের মধ্য থেকে ‘চিনি চোর’, ‘আটা চোর’ এ ধরনের স্লোগানও শোনা যায়।
সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে বিরোধী নেতা সৈয়দ ইউসুফ গিলানি সিনেট চেয়ারম্যানের কাছে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কথা বলার অনুমতি চান। তিনি বলেন, পেট্রোলিয়াম পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও আসন্ন গ্যাস সংকটের বিষয়ে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এসব বিষয়ে যথাযথভাবে অবগত ছিলেন না। তার বদলে অর্থমন্ত্রীর উচিত ছিল সংবাদ সম্মেলনে বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করা।
এদিন বিরোধীদের তোপের মুখে ক্ষমতাসীন পিটিআই নেতারা অবশ্য পাকিস্তানের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের জন্য পূর্ববর্তী সরকারগুলোকেই দায়ী করেছেন।