রণবীর
ঘোষ কিংকর: জ্বালানি তেল ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন
মালিক সংগঠনের ডাকা অঘোষিত অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাস ছাড়া সকল পরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
শনিবার
(৬ নভেম্বর) সকাল থেকে দেশের লাইফ লাইন খ্যাত মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে
পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরিসহ যাত্রীপরিবহনে মাইক্রোবাস, মারুতি,
পিকআপ বিআরটিসি বাসের সাথে মাঝে মধ্যে দূরপাল্লার বাস চলাচলও করছে।
মহাসড়কের
কুমিল্লার নিমসার, চান্দিনা, মাধাইয়া বাস স্টেশন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে
প্রতিটি স্টেশন এলাকায় যাত্রী পরিবহনে মাইক্রোবাস, মারুতির সাথে
প্রাইভেটকারও সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। মহাসড়কে বাস চলাচল কম থাকায় স্বাভাবিক
গতিতে চলছে পণ্য পরিবহনগুলো।
দূরপাল্লার যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়ায় এক
স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে মাইক্রোবাস, মারুতি গাড়ি পরিবর্তন করে চলাচল
করছে। মাঝে মধ্যে ২/৪টি বাস আসলে সেগুলোতে ভাড়ার কথা তোয়াক্কা না করে
গাড়িতে উঠতে হুরাহুরি করছে যাত্রীরা।
ধর্মঘটের মধ্যেও পরিবহন চলাচল
নিয়ে কথা হয় ট্রাক চালক মিল্লাদ হোসেন এর সাথে। তিনি জানান, গাড়িতে যে মাল
সেগুলো পঁচে গেলে মালিকের কাছে কি জবাব দিবো। তাই গাড়ি চালাচ্ছি।
কাভার্ডভ্যান
চালক বিল্লাল হোসেন জানান, বন্দর থেকে গুরুত্বপর্ণ মাল নিয়ে রেখেছি।
গতকালও গাড়ি চালাইনি। ফেনীর একটি পেট্রোল পাম্পে গাড়ি রেখে দিয়েছিলাম।
কিন্তু সেখান থেকে যদি কোন পণ্য খোয়া যায় তাহলে তার দায়ভার কে নিবে?
পন্যবাহী
গাড়ি চালক মিল্লাল হোসেন ও বিল্লাল হোসেন এর মতো এমন নানা যুক্তি দিচ্ছেন
চালকরা। তাদের ভাষ্যমতে ধর্মঘটের চেয়েও তাদের পণ্য পৌঁছে দেওয়াই বেশি
জরুরী।
তবে একাধিক বাস চালকদের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা কোন মন্তব্য
করতেই রাজি হয়নি। বরং সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর দ্রুত স্টেশন এলাকা ছাড়তে
দেখা গেছে।
কুমিল্লা বাস মালিক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ কবির আহমেদ
জানান, আমরা তো কোন ধর্মঘট ডাকিনি। জ্বালানি তেলের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধিতে
আমরা মালিকরা গাড়ি চালাচ্ছি না। যারা গাড়ি চালাচ্ছে তাদেরকে আমরা বাধাও
দিচ্ছি না। যেগুলো চলছে অবশ্যই অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। বিশেষ
করে পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে হয়তো কিছু কিছু মালিক গাড়ি চালাচ্ছেন।
হাইওয়ে
পুলিশ ময়নামতি ক্রসিং থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর
জানান, ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন পরিবহন মালিক সংগঠন। মহাসড়কে গাড়িও চলছে
মালিকদের। সেখানে আমাদের মন্তব্যের কিছু নেই। নিরাপদ সড়কে যানবাহন চলাচলে
আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।
প্রসঙ্গত, বুধবার মধ্যরাত থেকে
জ্বালানি তেল ডিজেল ও কেরোসিন এর মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাতে শুক্রবার ভোর ৬টা
থেকে ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন মালিক সংগঠন।