Published : Tuesday, 16 November, 2021 at 12:00 AM, Update: 16.11.2021 1:23:28 AM
স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে
পদকজয়ী নন্দিত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক আর নেই (ইন্নালিল্লাহি
ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৮৩ বছর। সোমবার (১৫
নভেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে তিনি রাজশাহীর বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ
করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী
অধ্যাপক সাজ্জাদ বকুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে
বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসান
আজিজুল হককে গত ২১ আগস্ট রাজশাহী থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নেওয়া হয়।
প্রথমে তাকে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) স্থানান্তর করা
হয়।
প্রায় তিন সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে গত ৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজশাহীর বাসভবন ‘উজান’-এ ফিরেছিলেন হাসান আজিজুল হক।
মৃত্যুকালে
তিনি স্ত্রী, তিন কন্যা এবং এক ছেলেকে রেখে গেছেন। তার ছেলে ইমতিয়াজ হাসান
মৌলি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের
সহযোগী অধ্যাপক।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল
ইসলাম টিপু জাগো নিউজকে জানান, আগামীকাল শহীদ মিনারে তার (হাসান আজিজুল
হকের) মরদেহে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে। বাদ জোহর রাবির কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ
প্রাঙ্গণে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে রাবির গোরস্থানে দাফন
করা হবে।
হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের
বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ থেকে ১৯৭৩ পর্যন্ত তিনি
রাজশাহী সিটি কলেজ, সিরাজগঞ্জ কলেজ, খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ এবং সরকারি
ব্রজলাল কলেজ অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের
দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত
একনাগাড়ে ৩১ বছর অধ্যাপনা করেন।
২০০৯-এ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদের জন্য মনোনীত হন এবং দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের
আগস্টে হাসান আজিজুল হক বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন।
এর
আগে ১৯৭০ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। বাংলাদেশ
সরকার তাকে ১৯৯৯ সালে একুশে পদকে ও ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত
করে।
এই অসামান্য গদ্যশিল্পী তার সার্বজৈবনিক সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ‘সাহিত্যরত্ন’ উপাধি লাভ করেন।