ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
হারের বৃত্তে বাংলাদেশ
Published : Saturday, 20 November, 2021 at 12:00 AM
একাদশে নতুনদের নিয়ে এসেও ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারলো না বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জয়ের আশা দেখিয়েও পরাজয় বরণ করতে হলো টাইগারদের। স্বাগতিকদের করা ১২৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫ বল বাকি রেখে জয় নিশ্চিত করে সফরকারী দল। এই হারে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে পিছিয়ে থাকলো বাংলাদেশ।
শেষ চার ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৩২ রানের, ব্যাটিংয়ে ছিল না অভিজ্ঞ কেউ। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা দুই বোলার শরিফুল-মোস্তাফিজের ছিল একটি করে ওভার। কিন্তু ক্ষতি যা করার এই দুজনেই করে গেছেন। ১৮ ও ১৯ ওভারে তারা দুজনে দিলেন ৩০ রান। শেষটায় চার বল বাকি থাকতেই আমিনুল ইসলামকে ছক্কায় উড়িয়ে জয়ের উদযাপনে মাতেন শাদাব খান ও মোহাম্মদ নওয়াজ।
এর আগে টস জিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভালো শুরু পেলো না বাংলাদেশ। নতুন ওপেনার সাইফ হাসানের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটি বড় করতে পারেননি নাঈম। দ্বিতীয় ওভারে হাসান আলীর প্রথম বলে রিজওয়ানের তালুবন্দী হন তিনি। ফেরার আগে টাইগার ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ১ রান।  সাইফ হাসানের অভিষেকটা লম্বা হয়নি বেশি। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ ওয়াসিমের ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন এই ওপেনার। তার ব্যাট থেকে আসে ১ রান। উইকেটের মিছিল যেন থামছেই না। সাইফ ও নাঈমের পর সাজঘরে ফিরেছেন নাজমুলও। পঞ্চম ওভারে মোহাম্মদ ওয়াসিমকে মারতে গিয়ে কট অ্যান্ড বোল্ড হন তিনি। টাইগারদের আরো হতাশ করে ফেরার আগে শান্তর ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে ৭ রান। বিশ্বকাপের ব্যর্থতা দেশেও টেনে এনেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে পাওয়ারপ্লেতে তিন উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৫ রান তুলেছে টাইগাররা।
তিন উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের বোলিংয়ের কাছে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ ভরসা খুঁজছিল মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। কিন্তু টাইগার অধিনায়ককে মাত্র ৬ রানেই থামিয়ে দিলেন মোহাম্মদ নওয়াজ। টাইগারদের ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে একা লড়াই করছিলেন আফিফ হোসেন। তবে ইনিংস বড় করার আগে ৩৪ বলে ৩৬ রান করে বিদায় নেন তিনি। শাদাব খানের গুগলিতে স্টাম্পড হন আফিফ।
আফিফের মতোই আশা জাগিয়ে ফিরলেন নুরুলও। ১৭তম ওভারে হাসান আলীকে এনে নুরুলকে ফেরালো পাকিস্তান। হাসান আলীর বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২২ বলে ২ ছক্কায় ২৮ রান করেন নুরুল।
১৮তম ওভারে এসে ১০০ রান পার করে বাংলাদেশ। হ্যারিসের করা ওভারের পঞ্চম বলে এক রান নেন ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান আমিনুল, তাতেই বাংলাদেশের হলো ১০০। আগের ওভারে নুরুলকে ফেরানো হাসান আলীকে ওভারের প্রথম বলে বিশাল ছক্কা মারেন মেহেদী হাসান। ওভারের চতুর্থ বলে আমিনুলকে বোল্ড করেন হাসান আলী। ৫ বল খেলে ২ রান করে হাসান আলীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
শেষ দিকে দলের হাল ধরেন মেহেদী হাসান। ২০ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় তিনি অপরাজিত ৩০ রান করেন। আর শেষ বলে হ্যারিস রউফকে ছক্কা মেরে দলীয় স্কোর ১২৭ রানে নিয়ে যান তাসকিন। বিশ্বকাপে নিজের ছায়া হয়ে থাকা হাসান আলী এদিন ২২ রান খরচায় তিন উইকেট তুলে নেন। মোহাম্মদ ওয়াসিম ২টি, নাওয়াজ ও শাদাব খান প্রত্যেকে একটি করে উইকেট লাভ করেন।



জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। প্রথম ওভারে মাত্র ৪ দেন স্পিনার মেহেদী হাসান। তৃতীয় ওভারে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান। নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট পেলেন কাটার মাষ্টার। তার দ্রুতগতির বল বুঝতেই পারেননি রিজওয়ান। ১১ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফিরেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

রিজওয়ানের পর ফিরলেন আরেক পাকিস্তানি ওপেনার বাবর আজম। তাসকিন আহমেদের করা চতুর্থ ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ৮ রান করা পাকিস্তানি অধিনায়ক।
দুই পেসার তাসকিন ও মোস্তাফিজের পর উইকেট পেয়েছেন স্পিনার মেহেদী হাসান। ম্যাচের পঞ্চম ওভারে মেহেদীর বলে বলে সুইপ করতে গিয়ে বল ব্যাটে লাগাতে পারেননি হায়দার আলী। শূন্যরানে এলবিডব্লিউ হয়ে রিভিও নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। এরপর ষষ্ঠতম ওভারে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শোয়েব মালিক উইকেটরক্ষক সোহানের দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউট হন। তিনিও কোন রান করতে পারেননি।
পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারানোর পর পাকিস্তানের ইনিংসকে সামাল দেন ফখর জামান ও খুশদিল শাহ। পঞ্চম উইকেটে ৫৬ রানের জুটি গড়ে বিদায় নিয়েছেন ফখর জামান। ১৫তম ওভারে তাসকিনের করা দ্বিতীয় বলে ৩৪ রান করে আউট হন ফখর।
সেই ফাখর জামানকে অবশেষে উইকেটের পেছনে নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তাসকিন আহমেদ। আউট সুইঙ্গার বলটি ফাখর জামানের ব্যাটে লেগে চলে যায় সোহানের হাতে। ৩৬ বলে খেলা ৩৪ রানের ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটে সেখানে।
ফখরের বিদায়ের ১৬ রান পর ৩৫ বলে ব্যক্তিগত ৩৪ রান করা খুশদিল শাহকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। খুশদিলের বিদায়ের পর ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় শাদাব খান ও মোহাম্মদ নওয়াজ ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। শাদাব ১০ বলে ২ ছয় ও এক চারে ২১ রান এবং নওয়াজ ৮ বলে ২ ছয় ও এক চারে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন ২টি, মেহেদী, মোস্তাফিজ ও শরিফুল প্রত্যেকে একটি করে উইকেট পান।