Published : Thursday, 25 November, 2021 at 12:00 AM, Update: 25.11.2021 1:30:00 AM
ইসমাইল নয়ন:
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনিরুল হক সরকার নামে এক ব্যক্তি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়ায় রাগে ও ক্ষোভে দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করেছেন তার পুত্র। বুধবার (২৪ নভেম্বর) সকালে ঘটে এ ঘটনা। উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়ন থেকে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল হক সরকার। তবে বাবা দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় রাগে ও ক্ষোভে ফেসবুক লাইভে এসে নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর করেছেন ছেলে ছাত্রলীগ নেতা বাইজিদ সরকার। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৪র্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুলালপুর ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন মো. মনিরুল হক সরকার। গত মঙ্গলবার রাতে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বোর্ড মো. মনিরুল হককে দলীয় মনোনয়ন না দিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেনকে দলীয় মনোনয়ন দেয়।
পরদিন বুধবার সকাল ১০টার দিকে মনিরুল হক সরকারের ছেলে বায়েজিদ হোসেন দুলালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রবেশ করে প্রধান মন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ছবি দুটি নামিয়ে মুছে অনত্র সরিয়ে নেয়। এ সময় দলীয় কার্যালয়ের আসবাবপত্র, ও কার্যালয়টি ভাংচুর করে। এ সময় দলীয় নেতাদের ছবিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুরো ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে প্রচার করেন তিনি। যদিও পরে আবার লাইভটি তার আইডি থেকে মুছে ফেলেন। খবর পেয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুল হক সরকার বলেন, আমি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। দীর্ঘদিন আমি আওয়ামীলীগের সভাপতি। আমি দলীয় মনোননয়ন পায়নি। টাকার বিনিময়ে দলের একজন সাধারণ সদস্যকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি ঢাকায় একই কথা বলেছি।
তিনি বলেন, তিনি বর্তমানে ঢাকায় আছেন। বাড়ি থেকে ফোন করে জানিয়েছে ছেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করেছে। আমি তাকে শতাধিকবার ফোন দিয়েছি। সে ফোন ধরছে না। তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা। আমি যেহেতু মনোয়নন পাইনি। নির্বাচন করবো না।
ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, মনিরুল হক সরকার মনোনয়ন না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ছেলে দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করেছে। তবে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর করেনি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী বলেন, মনিরুল হক সরকার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি। তাঁর নাম এক নম্বরে দিয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তিন নম্বরে ছিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদ তোফাজ্জল হোসেনের নাম। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী তোফাজ্জল হোসেনকে মনোনয়ন দিয়েছেন। মনিরুল হকের ছেলে ক্ষিপ্ত হয়ে দলীয় কার্যালয় ও আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে। প্রধান মন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর করেনি। তার বাবা মনিরুল হক ঢাকায় রয়েছে। তিনি এ ঘটনার বিচার করে দেওয়ার কথা বলেছেন।