ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
আসছে পৌষ বাড়ছে শীত
Published : Monday, 13 December, 2021 at 12:00 AM, Update: 13.12.2021 1:28:03 AM
আসছে পৌষ বাড়ছে শীত
শেষের দিকে অগ্রহায়ণ। তিন দিন পরই শুরু হচ্ছে শীতের মাস পৌষ। ইতোমধ্যেই সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। শহরগুলোতে শীতের মাত্রা তুলনামূলক কম হলেও হাড় কাঁপাচ্ছে গ্রামে। হিমালয় কন্যা খ্যাত পঞ্চগড় জেলায় প্রতিদিনই কমছে তাপমাত্রা। রবিবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এবারের শীত মৌসুমে এটিই এখন পর্যন্ত রেকর্ড হওয়া সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

এর আগের দিন শনিবার তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। অবশ্য দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এখানে ২৭ থেকে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিরাজ করছে।

এবার শীতের গতি প্রকৃতিতে ভিন্নতা দেখা দিয়েছে। বিগত বছরগুলোতে এ সময় শীতের প্রকোপ ছিল বেশি। কিন্তু এবারে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন রেকর্ড করা হলেও শীতের তীব্রতা কম বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদ ও স্থানীয়রা।

পঞ্চগড়ে রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ বিরাজ করেছে। অবশ্য শেষ বিকাল থেকেই জেলায় কুয়াশা দেখা দিচ্ছে। রাতেও কুয়াশা থাকছে। পাশাপাশি হালকা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। সকাল ১০টার পর সূর্যের তেজ বেশি থাকায় রাতের শীত এ এলাকার মানুষকে কাবু করতে পারছে না। সকালে সূর্য উঠলে ধীরে ধীরে কুয়াশা কেটে যাচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের তীব্রতা বেড়ে যায়, তবে বিকেল গড়াতেই তাপমাত্রা কমে শীতের আমেজ শুরু হয়।

ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ থাকায় যানবাহনগুলোকে বাতি জ্বালিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন। দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষকে কাজ শুরুর জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

জেলার সদর উপজেলার মীরগড় এলাকার বৃদ্ধা জরিফন নেছা বলেন, ‘হামরা গরিব মানুষ বা হামরা কম্বলও পাই না। গরম কাপড়ও কিনিবা পারি না। হামার খড়কুটার ওপরতে ভরসা করিবা নাগে।’

সদর উপজেলার হাফিজাবাদ এলাকার বৃদ্ধ আসিরউদ্দিন জানান, এইবার শীতটা বিকাল থেকে লাগছে। রাতে বেশি। আবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ও শীত বেশি থাকছে। শীত বাড়িলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

জেলা শহরের মসজিদপাড়া এলাকার সরিফউদ্দিন বলেন, ‘বিকাল থেকে ঠান্ডা অনুভূত হয়। রাতে তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীত লাগে তবে এটা এখনও আমাদের জন্য সহনীয়।’

জেলা শহরের অটোচালক আনোয়ার বলেন, ‘ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। সকালে কুয়াশা থাকায় যাত্রী তেমন একটা পাওয়া যায় না।’

তেতুঁলিয়া প্রথম শ্রেণি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, ধীরে ধীরে তাপমাত্রা কমছে। পঞ্চগড়ে আজকে শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষে তাপমাত্রা আরও কমবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলার ৪৩টি ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার গরিব অসহায় ও শীতার্ত মানুষদের মাঝে প্রায় ২২ হাজারের মতো শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলা প্রশাসন এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করছে। আরও শীতবস্ত্র চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, প্রায় ২২ হাজার কম্বল ও শীতবস্ত্র কিনতে আট লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আরও শীতবস্ত্রের চাহিদা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে। শীতার্তদের রক্ষায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।