রণবীর ঘোষ কিংকর।
কুমিল্লার
চান্দিনা উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১২টি ইউনিয়নেই দলীয় মনোনয়ন দিয়ে
প্রার্থী দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর ওই ১২টি ইউনিয়নের ৬টিতেই নৌকার
বিপক্ষে ত্রিমুখী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ওই ৬টি ইউনিয়নে
স্বতন্ত্রের ব্যানারে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিয়েছেন বিএনপি, এলডিপি ও
জামায়াত প্রার্থীরা। অপরদিকে ১২টি ইউনিয়নে নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী
রয়েছেন ২৯জন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাতাঘাসী, কেরণখাল,
এতবারপুর, বরকইট, দোল্লাই নবাবপুর ও জোয়াগ ইউনিয়নে রয়েছেন ২০ দলীয় জোট
সমর্থক প্রার্থীরা। তাদের মধ্যে বাতঘাসী, বরকইট, দোল্লাই নবাবপুর ও জোয়াগ
ইউনিয়নে রয়েছে হেভিওয়েট প্রার্থী।
উপজেলার ১নং শুহিলপুর ইউনিয়নে আওয়ামী
লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান
চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন সরকার। ওই ইউনিয়নে মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগের ৬
বিদ্রোহী প্রার্থী। তারা হলেন- আনারস প্রতীকে আবু বকর ছিদ্দিক, মটর সাইকেল
প্রতীকে হারুন অর রশিদ, চশমা প্রতীকে রফিউদ্দিন, ঘোড়া প্রতীকে কামাল
সরকার, টেলিফোন প্রতীকে জোনাঈদ ভূইয়া ও অটোরিক্সা প্রতীকে নজরুল ইসলাম। ওই
ইউনিয়নে ২০ দলীয় জোট সমর্থক কোন প্রার্থী নেই।
২নং বাতাঘাসী ইউনিয়নে
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান
চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম (নৌকা)। ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী
রয়েছে ৩জন। তারা হলেন- আনারস প্রতীকে আ.ন.ম. কামরুজ্জামান ভূইয়া, মটর
সাইকেল প্রতীকে এমদাদুল হক, রজনীগন্ধ্যা প্রতীকে খাইরুল ইসলাম। ওই ইউনিয়নে
কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মানসিকতা নিয়ে টেবিল ফ্যান প্রতীকে মাঠে আছেন
উপজেলা এলডিপি সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান সিরাজ, ঘোড়া
প্রতীকে বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ও হাত পাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন
বাংলাদেশ প্রার্থী সালাহ উদ্দিন সোহাগ। ওই ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী
হিসেবে মাঠে আছেন আরও ৩জন।
৩নং মাধাইয়া ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের
মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা
মজিবুর রহমান। ওই ইউনিয়নে হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
প্রার্থী থাকলেও কঠোর অবস্থানে আনারস প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন আওয়ামী লীগ
বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান অহিদ উল্লাহ। প্রার্থী হিসেবে মাঠে
আছেন আরও দুই জন।
৫নং কেরণখাল ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন
নিয়ে নৌকা প্রতীকে মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান হারুন
অর রশিদ। ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন আরও
২জন। আনারস প্রতীকে সুমন ভূইয়া ও মটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে শামছুল আলম। ওই
ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থক প্রার্থী আছেন চশমা প্রতীকে আতিকুর রহমান।
৬নং
বাড়েরা ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে মাঠে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম। ওই ইউনিয়নে আওয়ামী
লীগের বিদ্রোহী হিসেবে মাঠে আছেন আনারক প্রতীকে আহসান হাবীব ভূইয়া। মাঠে
আছেন ঘোড়া প্রতীকে সাবেক এলডিপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন কালা
ও হাত পাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী ছিদ্দিকুর রহমান
খান।
৭নং এতবারপুর ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা
প্রতীকে মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান একেএম মামুনুর
রশিদ। ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন তিন জন।
তারা হলেন- ঘোড়া প্রতীকে আবুল কাশেম, আনারস প্রতীকে মো. ইউসুফ ও মটর
সাইকেল প্রতীকে সহিদুল ইসলাম সিকদার। ওই ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থক প্রার্থী
রয়েছেন চশমা প্রতীকে কাউসার আহমেদ।
৮নং বরকইট ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী
লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান
চেয়ারম্যান আবুল হাসেম। ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে
মাঠে আছেন আরও ৪জন। তারা হলেন- টেবিল ফ্যান প্রতীকে মোহাম্মদ আবুল কালাম,
আনারস প্রতীকে মো. আবুল বাসার, চশমা প্রতীকে শাহজাহান, অটোরিক্সা প্রতীকে
সেলিম মিয়া। ওই ইউনিয়নে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঘোড়া প্রতীকে সাবেক বিএনপি
নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান নূরে আলম। মাঠে আছেন মটর সাইকেল প্রতীকে ছাত্রদল
নেতা মাজহারুল ইসলাম।
৯নং মাইজখার ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের
মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জামাল উদ্দীন। ওই
ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীকে মাঠে আছেন
বর্তমান চেয়ারম্যান শাহ্ সেলিম প্রধান। ওই ইউনিয়নে মটর সাইকেল প্রতীকে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এলডিপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন ও ঘোড়া প্রতীকে সাবেক
বিএনপি নেতা জাকির হোসেন।
১০নং গল্লাই ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের
মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আতাউর রহমান গণি। ওই
ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন ৪ জন। তারা
হলেন- আনারস প্রতীকে নজরুল ইসলাম, চশমা প্রতীকে সাবেক চেয়ারম্যান বীর
মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিম দর্জি, ঘোড়া প্রতীকে মজিবুর রহমান, মটর সাইকেল
প্রতীকে শাহজালাল। এছাড়াও ওই ইউনিয়নে মাঠে আছেন ইসলামী আন্দোলন ও কমিউনিষ্ট
পার্টির আরও দুই প্রার্থী।
১১নং দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়নে বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন
বর্তমান চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন। ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী
প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন তিন প্রার্থী। তারা হলেন- আনারস প্রতীকে জামাল
হোসেন, মটর সাইকেল প্রতীকে আবুল কালাম আজাদ, ঘোড়া প্রতীকে আয়েত আলী। ওই
ইউনিয়নে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মানসিকতা নিয়ে মাঠে আছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও
জামায়াত নেতা মো. শাহজাহান। ওই ইউনিয়নে প্রার্থী রয়েছেন আরও ৪জন।
১২নং
বরকরই ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে মাঠে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শিপন। ওই ইউনিয়নে
একজন অরাজনৈতিক স্বতন্ত্র ও একজন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী রয়েছেন।
১৩নং জোয়াগ ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে
মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইঞ্জি. আব্দুল আউয়াল খান। ওই ইউনিয়নে
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন আনারস প্রতীকে আওয়ামী লীগ নেতা শাহেন
শাহ মিঞা। তবে ওই ইউনিয়নে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে আছেন বিএনপি নেতা ও
সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের ভূইয়া। এছাড়াও মাঠে আছেন আরও ২জন।