ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
চান্দিনা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন;
আওয়ামী লীগে আভ্যন্তরীণ কোন্দল
সুবিধা জনক অবস্থায় ২০ দলীয় সমর্থক প্রার্থীরা
Published : Monday, 27 December, 2021 at 12:00 AM, Update: 27.12.2021 1:21:42 AM
আওয়ামী লীগে আভ্যন্তরীণ কোন্দল রণবীর ঘোষ কিংকর।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২টি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নির্বাচন। ওই নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোট সরাসরি অংশ গ্রহণ না করলেও চান্দিনা উপজেলার বেশি কয়েকটি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ব্যানারে অংশ নিয়েছে বিএনপি, এলডিপি ও জামায়াত সমর্থক প্রার্থীরা।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১২টি ইউনিয়নেই নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে প্রার্থী মনোনীত করার পরও প্রতিটি ইউনিয়নে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। দলটিতে তাদের কারও পদ পদবী থাকলেও আবার কেউ সমর্থক। প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বেশ কয়েটি ইউনিয়নে সুবিধা নিতে পারে ২০ দলীয় জোট সমর্থক প্রার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে চান্দিনার ১২টি ইউনিয়নের তফসিল ঘোষণার পর দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে সদ্য প্রয়াত সাংসদ অধ্যাপক আলী আশরাফ অনুসারী প্রার্থীরা। তারা মরহুম আলী আশরাফ এর ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু’র নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলীয় মনোনয়ন পেতে লবিং তদবীর চালিয়ে যান। সেই মোতাবেক প্রতিটি ইউনিয়নের প্রার্থী চূড়ান্ত করে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ হয়ে কেন্দ্রে প্রস্তাব পাঠানো হয় টিটু সমর্থিত প্রার্থীদের নাম।
এদিকে, অধ্যাপক আলী আশরাফ এমপি’র মৃত্যুর পর শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনে প্রথম বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর পৃথক ধারায় চলতে থাকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। চলতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত অনুসারীরাও প্রতিটি ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার লবিং করেন। কেন্দ্রে পাঠানো হয় এমপি’র সুপারিশকৃত প্রার্থীদের নামের তালিকা।
পরবর্তীতে কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগ দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ না মিটিয়ে টিটু সমর্থিত অধিকাংশ প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করে দলীয় মনোনয়ন দেয়। তাতেই প্রতিটি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। পঞ্চম ধাপের তফসিল অনুযায়ী ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত ১২টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১০১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, কমিউনিস্ট পার্টি, জাকের পার্টি সহ ২৩জন দলীয় প্রার্থী বাকি ৭৮জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। ওই ৭৮জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ৫৪জনই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী বা আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থী।
১৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত ২৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার পরও ৫৩জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই ৫৩জনের মধ্যে ২৯জনই আওয়ামী লীগ সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থী। বাকি ১৬জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ৬টি ইউনিয়নে ৮জন রয়েছেন বিএনপি, এলডিপি ও জামায়াত সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থী। ওই ৬ ইউনিয়নের মধ্যে অন্তত ৪টি ইউনিয়নে ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেন ওই প্রার্থীরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু জানান, এমপি মহোদয়ের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের সাথেই তিনি আছেন এবং থাকবেন। যারা এমপি মহোদয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেকে এমপি’র প্রার্থী দাবী করছেন তার বিষয়ে আমাদের জানা নেই। উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে আমরা আবারও সতর্ক করছি। ২/১ দিনের মধ্যে তারা নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।