রণবীর
ঘোষ কিংকর: দলীয় ব্যানারে অনুষ্ঠিত হওয়া চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ
নেয়নি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। সারা দেশে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা
ছাড়া প্রায় অধিকাংশ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে
অনুষ্ঠিত হওয়ায় স্বতন্ত্রের ব্যানারে প্রার্থী হচ্ছেন ২০ দলীয় জোটের
সমর্থকরা।
পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার
১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৭টি ইউনিয়নে প্রার্থী
হয়েছেন ২০ দলীয় জোটের অন্তত ১০ প্রার্থী। তাদের মধ্যে অর্ধেকই রয়েছেন
হেভিওয়েট প্রার্থী। অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচনের
প্রত্যাশায় দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে নেমেছেন
তারা। তাদের কেউ ২০ দলীয় জোট অন্তর্ভূক্ত রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পদ পদবী
থাকলেও আবার কেউবা দলের সমর্থক।
সকাল থেকে রাত অবধি অন্যান্য
প্রার্থীদের ন্যায় তারাও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন।
তাদের নেই দলীয় প্রতীক, আবার স্বতন্ত্র প্রতীকের মধ্যে জনপ্রিয় প্রতীক
‘আনারস’ও পায়নি তারা কেউ। তারপরও প্রচারণায় পিছিয়ে নেই ২০ দলীয় সমর্থক
প্রার্থীরা।
১৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত ২৫
প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার পরও ৫৩জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মাঝে
প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই ৫৩জনের মধ্যে ২৯জন আওয়ামী লীগ সমর্থক স্বতন্ত্র
প্রার্থী। বাকি ১৬জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ৭টি ইউনিয়নে ১০জন রয়েছেন
বিএনপি, এলডিপি ও জামায়াত সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থী। ওই ৭ ইউনিয়নের মধ্যে
অন্তত ৪টি ইউনিয়নে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন ওই প্রার্থীরা। এমটাই মনে করছেন
এলাকার ভোটার ও সমর্থকরা।
তারা হলেন- বাতাঘাসী ইউনিয়নে উপজেলা এলডিপি
সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান সিরাজ (টেবিল ফ্যান), বিএনপি
নেতা জসিম উদ্দিন (ঘোড়া), উপজেলার বরকইট ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থীর
ব্যনারে রয়েছেন ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি মাজহারুল ইসলাম (মটর সাইকেল), ওই
ইউনিয়নের সাবেক বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান নূরে আলম (ঘোড়া), এতবারপুর
ইউনিয়নে বিএনপি নেতা কাউসার আলম বকুল (চশমা), কেরনখাল ইউনিয়নে বিএনপি নেতা
আতিকুর রহমান (চশমা), মাইজখার ইউনিয়নে এলডিপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন (মটর
সাইকেল), দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়নে জামায়াত নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান
শাহজাহান মিয়া (চশমা), ওই ইউনিয়নে তার ভাই বিএনপি নেতা আক্তারুজ্জামান খাঁন
(রজনীগন্ধ্যা) ও জোয়াগ ইউনিয়নে বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান মাও. আবু
তাহের (ঘোড়া)।
জোয়াগ ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মাও.
আবু তাহের ভূইয়া জানান, কোন প্রকার বাঁধা বিপত্তি না আসলে এবং অবাধ ও
সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হলে জনগণ আমাকে বিজয়ী করবেন।
বাতাঘাসী
ইউনিয়নের উপজেলা এলডিপি সাংগঠনিক সম্পাদক টেবিল ফ্যান প্রতীক প্রার্থী
সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান সিরাজ জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি
মোতাবেক সারা দেশে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ হচ্ছে। এছাড়া চান্দিনার সংসদ সদস্যও
ঘোষণা দিয়েছেন সুষ্ঠু ভোটের। তাই আমি প্রার্থী হয়েছি। আমি ৪৪ বছর যাবৎ
রাজনীতি করি। ইউনিয়নের দুই বারের চেয়ারম্যান ছিলাম। আমার ইউনিয়নে ইভিএম
পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠিত হলে জনগণ আমাকে
নির্বাচনী করবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কাজী আরশাদ
জানান, আমাদের দলের বা জোটের যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা কেউ আমাদেরকে অবহিত
করেনি। দলের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তাদের ব্যাপারে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।