Published : Thursday, 30 December, 2021 at 12:00 AM, Update: 30.12.2021 12:16:46 AM
রণবীর ঘোষ কিংকর।
‘যারা
নৌকা করে তারা রাজাকারের বাচ্চা, কি করবেন রাজনীতি করে? যে দেশে টাকা দিলে
নমিনেশন হয়, যে দেশে টাকায় মন্ত্রীত্ব পাওয়া যায়, যে দেশে টাকা দিলে সব
আকাম কু-কুকাম শেষ হয়’।
কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা বিএনপি নেতার সাথে
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারের এমন
একটি ফোনালাপ ফাঁসের পর ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী
লীগের রাজনৈতিক অঙ্গণ।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে এক মিনিট ৪০
সেকেন্ডের ওই ফোনালাপটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের সাথে সাথে
কুমিল্লা উত্তর জেলার ৮টি উপজেলা আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনে
সমালোচনার ঝড় উঠে।
কেউবা ফেইসবুক লাইভে এসে তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছেন, কেউবা আওয়ামী লীগ থেকে রোশন আলী মাস্টারকে বহিস্কারের দাবী জানাচ্ছেন।
মঙ্গলবার
রাত সাড়ে ৯টায় তার নিজ উপজেলা দেবীদ্বারে বিক্ষোভ মশাল মিছিল ও রোশন আলী
মাস্টারের কুশপুত্তলিকা দাহসহ পরদিন বুধবার দুপুরে মানববন্ধন করে দেবীদ্বার
আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এসময় তারা রোশন আলী
মাস্টারকে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের
সকল কমিটি থেকে বহিষ্কারের দাবী জানান।
তিতাস উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি
বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী তার বক্তব্যে বলেন, ‘কুমিল্লা উত্তর জেলা
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে স্পষ্টই নেত্রীর উপর
বর্তায়। আমরা তিতাস উপজেলা আওয়ামী লীগ তার এই অসংঘতিপূর্ণ বক্তব্যে তীব্র
নিন্দা জ্ঞাপন করছি। পার্টির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্যের জন্য
আমরা কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগ ও নেতৃবৃন্দের কাছে তার বিচারের জোর দাবী
জানাই’।
তিতাস উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী
লীগ প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক পারভেজ হোসেন সরকার জানান, একটি
দায়িত্বশীল পদে থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের
বিরুদ্ধে এমন নেক্কার জনক বক্তব্য আমরা কখনও আশা করিনি। তার (রোশন আলী) এমন
বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রিয়
নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও
আওয়ামী লীগ নেতা মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন জানান, রোশন আলী মাষ্টারের
এমন বক্তব্যে আমরা মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছি। একজন আওয়ামী লীগের সাধারণ
কর্মীও এমন মন্তব্য করতে পারেন না। আর তিনি তো একজন সাধারণ সম্পাদক। আমরা
কুমিল্লা-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূইয়া এমপি’র
নির্দেশে দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলার পক্ষ থেকে এ মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ
ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি এবং তাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করছি।
কুমিল্লা উত্তর
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মু. রুহুল আমিন জানান, আওয়ামী লীগের এমন
গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে তার এমন বক্তব্য অত্যন্ত দুঃখ জনক। আর ফোন
রেকর্ডটি ছিল তার একান্ত মতামত। তার ওই মতামতের সাথে কুমিল্লা উত্তর জেলা
আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ দ্বিমত। আমরা ওই ফোন রেকর্ডের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগসহ
কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেছি। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা কাজ
করবো।