এয়ারলাইনসগুলোতে
এ ধরনের পরিস্থিতি প্রতিবছরই হয়, বিশেষ করে বছরের শেষ সময়ে। আন্তর্জাতিক
ক্ষেত্রেও ক্রিসমাস ও নতুন বছর সামনে রেখে বিভিন্ন এয়ারলাইনসের টিকিটের দাম
বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এয়ারলাইনসের টিকিটের উচ্চমূল্যের কারণে বিপাকে পড়তে
হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যগামী যাত্রী, বিশেষ করে কর্মীদের। সব
এয়ারলাইনসই মধ্যপ্রাচ্যের টিকিটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের সব
দেশে বিমানভাড়া তিন গুণের বেশি বেড়েছে।
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন,
‘সৌদি আরব ও ইউএই ভিসা দেওয়া বাড়িয়েছে। ওমানসহ আরো কয়েকটি দেশে ভিজিট ভিসা
দেওয়া হচ্ছে। আবার অনেকে করোনার নিষেধাজ্ঞার কারণে গত দুই বছর দেশে ফিরতে
পারেনি। এখন করোনা কমায় তারা ফিরছে। আবার দেশে অবস্থানরত অনেক প্রবাসী
কর্মীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তারা বাড়তি দামে টিকিট কিনতে বাধ্য
হচ্ছে।
তবে যাত্রীদের বেশি দামে টিকিট কেনার অভিযোগ অনেক পুরনো।
যাত্রীরা টিকিট কাটতে গিয়ে টিকিট পান না এমন অভিযোগও আছে। অথচ বিমান ছাড়ার
সময় দেখা যায় অনেক সিট খালি। মধ্যপ্রাচ্য থেকে সম্প্রতি ফেরা এক যাত্রীও
এমন অভিযোগ করেছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টিকিট পেতে তাঁকে রিয়াদে
বেশ কয়েক দিন ঘুরতে হয়েছে। আসা-যাওয়ার জন্য তাঁকে গুনতে হবে প্রায় দেড় লাখ
টাকা। অনেক কষ্টে জাতীয় পতাকাবাহী বাংলাদেশ বিমানের টিকিট কিনে ফ্লাইটে উঠে
দেখলেন, বিমানের অর্ধেকের বেশি আসন খালি।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব
ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) বলছে, দেশের বিমান সংস্থা
নিজেদের লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রমাণ করার জন্য বিভিন্ন খাতে
অপ্রয়োজনীয় মূল্য বৃদ্ধি করে। বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো বিমানকে অনুসরণ করে
পাল্লা দিয়ে ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। তবে ভেতরের খবর ভিন্ন। প্রকাশিত খবরে বলা
হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে এয়ারলাইনস আগে থেকেই বিভিন্ন ফ্লাইটের বেশ কিছু টিকিট
কিনে রাখে। এটা এক ধরনের ‘কারসাজি’। গ্রুপ টিকিটের আড়ালে এই টিকিট সস্তায়
কিনে আসন ব্লক করে রাখা হয়। পরে তারা বিভিন্ন ব্যক্তিকে একটি গ্রুপে দেখিয়ে
বেশি দামে সেই টিকিট ইস্যু করে।
আসনসংখ্যা বাড়াতে আটাব বিমানসহ
অন্যান্য এয়ারলাইনসকে বাড়তি ফ্লাইট দিতে অনুরোধ করেছে। তারা সংবাদ সম্মেলন
করেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও তারা সমাধান চেয়ে
চিঠি দিয়েছে বলে জানিয়েছে। কিন্তু কোনো ফল হয়নি। চাহিদা অনুযায়ী আসনসংখ্যা
বাড়ালেই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।