
গত
৩০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
জিপিএ ৫ পাওয়ায়ও আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। সারা দেশের কলেজগুলোতে একাদশ
শ্রেণির ভর্তির আবেদনপ্রক্রিয়া আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে। অন্যবারের
মতো এবারও পুরো ভর্তিপ্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে বলে এক
বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা বোর্ডগুলো জানিয়েছে, কলেজে
এই শিক্ষার্থীদের ভর্তি হতে আসনের কোনো সংকট নেই। অন্যদিকে প্রকাশিত একটি
খবরে বলা হয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মানসম্পন্ন কলেজের অভাব থাকায় এবার
জিপিএ ৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে না।
এতে
শিক্ষার্থীদের মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। অবশ্য
মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাবে শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই
শিক্ষার্থীদের মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আমাদের প্রচলিত
শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষাজীবনের শুরুতেই একজন শিক্ষার্থীর মনে ব্যর্থতার ছাপ
দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিযোগিতায় হেরে যাওয়ার মতো একটি অবস্থার সৃষ্টি
হচ্ছে।
যেকোনো দেশের উন্নয়নের মূল শর্ত হচ্ছে শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ।
আর সে কারণে শিক্ষা উন্নয়নে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। মানসম্মত শিক্ষা
ছাড়া শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। দেশে শিক্ষার মান নিয়ে কিছু প্রশ্ন
এখনো রয়ে গেছে। মানসম্মত শিক্ষা নির্ভর করে উপযুক্ত শিক্ষকের ওপর। মানসম্মত
শিক্ষকই পারেন শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষায় উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে।
মানতে হবে, আমাদের দেশে মানসম্মত শিক্ষকের অভাব আছে। এ জন্য শিক্ষকদের
মানসম্মত করে গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন।
এ সরকারের আমলে দেশে নতুন নতুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কলেজ শিক্ষা খাতে অনেক সংস্কার করা হয়েছে।
অনেক বেসরকারি কলেজ জাতীয়করণ হয়েছে। কিন্তু এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
শিক্ষকদের সরকারি কলেজের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
জাতীয়করণ মানে শুধু সরকারি তহবিল থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নয়,
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান উন্নয়নের দায়িত্বও সমানভাবে সবার ওপর
বর্তায়।
শিক্ষা মানসম্মত না হলে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।
ভিত্তি দুর্বল হলে শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। প্রাথমিকের সমাপনী
পরীক্ষা থেকে শুরু করে এসএসসি-এইচএসসির ফল পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে,
মানের দিক থেকে শহর ও গ্রামের মধ্যে বিস্তর ফারাক। আগের বছরগুলোর ভর্তির
তথ্যানুযায়ী বেশি আবেদন পড়া কলেজগুলোর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৭৫টি, রংপুর
বিভাগে ৩২টি, বরিশাল বিভাগে ১৪টি, রাজশাহী বিভাগে সাতটি, চট্টগ্রাম বিভাগে
১৯টি, খুলনা বিভাগে ১৩টি এবং সিলেট বিভাগে ২৩টি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার
অনেক কম নামি কলেজও ভালো ফল করা শিক্ষার্থী পাবে। এই কলেজগুলোর সামনে মান
উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। তারা যদি মান উন্নয়ন করতে পারে, আগামী দিনে তারাও
নামি কলেজে পরিণত হবে।