স্পোর্টস ডেস্ক ||
হারারে টেস্টে জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। রোববার শেষ দিনে সাকিব-মিরাজরা যদি প্রত্যাশিত মানের বোলিং করতে পারেন তাহলে কাঙ্ক্ষিত জয় পাওয়া সম্ভব।
হারারে টেস্টে জয়ের জন্য টাইগারদের প্রয়োজন আর মাত্র ৭ উইকেট। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ৩৩৭ রান।
শনিবার বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৭৭ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান করে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপাকে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। দলীয় ১৫ রানে জিম্বাবুয়ের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ।
দলীয় ষষ্ঠ এবং নিজের প্রথম ওভারে বোলিংয়ে এসেই দ্বিতীয় বলে শিকার করেন মিল্টন শুম্বার উইকেট। তার গতির বলে বদলি ফিল্ডার ইয়াসির আলীর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার।
এরপর ওপেনার কাইতানোর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৯৫ রান যোগ করেন টেইলর। দলীয় ১১০ রানে ৭৩ বলে ১৬টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৯২ রান করে মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন টেইলর।
মেহেদী হাসান মিরাজের অফ স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে পরপর দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন জিম্বাবুয়ের এ অধিনায়ক।
প্রথম ইনিংসে ৮১ রানে আউট হওয়া টেইলর দ্বিতীয় ইনিংসে ফেরেন ৯২ রানে। মাত্র ৮ রানের জন্য দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করতে পারেননি এই তারকা ব্যাটসম্যান।
চতুর্থ দিনের শেষ বিকালে সাকিব আল হাসানের স্পিনের শিকার হন জিম্বাবুয়ের ওপেনার কাইতানো। ১০২ বল মোকাবেলা করে মাত্র ৭ রানে ফেরেন এ ওপেনার। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ১৩২ রানে প্রথম সারির ৩ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারায় জিম্বাবুুয়ে।
এর আগে সাদমান ইসলাম অনিক ও নাজমুল হোসেন শান্তর জোড়া সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৭৬ রানের বড় লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথম ইনিংসে ১৯২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে সফরকারী বাংলাদেশ দল।
দ্বিতীয় ইনিংসে উদ্বোধনীতে সাইফ হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ৮৮ রানের জুটি গড়েন সাদমান। ৯৫ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৪৩ রান করে ফেরেন সাইফ হাসান।
এরপর ওয়ান ডাউনে ব্যাটিংয়ে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ১৯৬ রানের জুটি গড়েন সাদমান। এই জুটিতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি করেন ২৬ বছর বয়সী এই তরুণ ওপেনার। ১৮০ বলে ৮টি বাউন্ডারির সাহায্যে শত রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাদমান।
সাদমান সেঞ্চুরি করার পর একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১০৯ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
৪৭৬ রানের বড় লিড হওয়ার পর দলীয় ২৮৪/১ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ।
হারারে টেস্টে ওয়ানডের মতো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে ১১৮ বলে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কায় অপরাজিত ১১৭ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৯৬ বল মোকাবেলা করে ৯টি বাউন্ডারির সাহায্যে অপরাজিত ১১৫ রান করেন ওপেনার সাদমান।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ১৩২ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলের হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৪৬৮ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা।
সপ্তম উইকেটে লিটন দাসের সঙ্গে ১৩৮ রানের জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এরপর নবম উইকেটে পেস বোলার তাসকিন আহমেদের সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯১ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন রিয়াদ।
৪১৩ মিনিট ব্যাটিং করে ১৭টি চার ও একটি ছক্কায় টেস্ট ক্যারিয়ার সেরা ১৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৫ রান করেন লিটন। ৭৫ রান করেন তাসকিন আর ৭০ রান করেন অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ২ উইকেটে ২২৫ রান করা জিম্বাবুয়ে এরপর সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণি বলে বিভ্রান্ত হয়ে ২৭৬ রানে অলআউট হয়।