কুমিল্লায় সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ভাতা ভোগীর সংখ্যা ৩ লক্ষ ১৩ হাজার
Published : Monday, 10 January, 2022 at 12:00 AM
মো. মিজানুর রহমান ||
কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৩ লক্ষ ১৩ হাজার ৯ জন ভাতা ভোগী মাসিক ভাতা পাচ্ছেন। এর মধ্যে মুত্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা দুঃস্ত মহিলা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি কার্যক্রম, বেদে জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন ভাতা, অনগ্রসর জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন ভাতা, হিজড়া জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন ভাতা, অনগ্রসর জনগোষ্ঠির শিক্ষা উপবৃত্তি, বেদে জনগোষ্ঠির শিক্ষা উপবৃত্তি ও হিজড়া জনগোষ্ঠির শিক্ষা উপবৃত্তি কার্যক্রম রয়েছে। এছাড়াও ক্যান্সার, কিডনী, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের অর্থিক কর্মসূচীর আওতায় প্রতিরোগীকে ৫০ হাজার টাকা করে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৫৮৩ জন রোগীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। কুমিল্লা জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এর উপপরিচালক জেড.এম. মিজানুর রহমান খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, জেলায় মাসে ১২ হাজার টাকা করে ৮ হাজার ৬৪৭ জন মুত্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা, মাসে ৫০০/- টাকা করে ১ লক্ষ ৭৪ হাজার ৮৯৬ জন বয়স্ক ভাতা, মাসে ৫০০/- টাকা করে ৫৭ হাজার ৫৭২ জন বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা দুঃস্ত মহিলা ভাতা, মাসে ৭৫০/- টাকা করে ৬৭ হাজার ৬২৮ জন প্রতিবন্ধী ভাতা, ২ হাজার ৭৪১ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি, মাসে ৫০০/- টাকা করে ৩৭ জন বেদে জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন ভাতা, মাসে ৫০০/- টাকা করে ৮০০ জন অনগ্রসর জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন ভাতা, মাসে ৬০০/- টাকা করে ১১২ জন হিজড়া জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন ভাতা, ৫১১ জন অনগ্রসর জনগোষ্ঠি শিক্ষা উপবৃত্তি, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিগ্রী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য, ৪৫ জন বেদে জনগোষ্ঠির শিক্ষা উপবৃত্তি ও ২০ হিজড়া জনগোষ্ঠির শিক্ষা উপবৃত্তি পেয়ে আসছেন। এছাড়াও আর্থ সমাজিক কার্যক্রমের আওতায় পল্লী সমাজ সেবা কার্যক্রম (প্রথম-ষষ্ঠ পর্ব) উপকার ভোগীর/স্কীম গ্রহীতার সংখ্যা ২৩ হাজার ৯৩৩ জন। ঘূর্ণায়মান তহবিল (২০১১-২০২১) অর্থ বছরে ৬ হাজার ৮২২ জন, এসিডদগ্ধ ও শারিরীক প্রতিবন্ধীদের পূনর্বাসন কার্যক্রম ৩ হাজার ৭৪২ জন, পল্লী মাতৃকেন্দ্র কার্যক্রম ৬ হাজার ৮৫২ জন, শহর সমাজসেবা কার্যক্রম ১ হাজার ৫৯৫ জন ও আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ৪৩ হাজার ১৩২ জন উপকারভোগী রয়েছেন। জেলায় ১ হাজার ৮৪০টি নিবন্ধীকৃত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ২৯৯টি নিবন্ধীকৃত এতিমখানা, ২৬৩ টি ক্যাপিটেশন গ্র্যান্টপ্রাপ্ত (২০২০-২১) এতিমখানা রয়েছে।
হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রম ১৯৭৩ খ্রি. থেকে শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রোগী কল্যাণ সমিতি রয়েছে ১৭টি, আজীবন সদস্য সংখ্যা ৩৬০ জন, হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যক্রম থেকে এ পর্যন্ত ঔষধ, রক্ত সরবরাহ, পথ্য, ক্র্যাচ প্রদান, যাতায়াত ব্যয়, পরীক্ষা ফি, দাফন, বস্ত্র, চশমা বিতরণ কার্যক্রমে ৭ লক্ষ ১৩ হাজার ৫৯৬ জন উপকৃত হয়েছেন। প্রবেশন এ্যান্ড আফটার কেয়ার সার্ভিস অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয় ৬ জুন ১৯৯১ খ্রি.। এতে উপকৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ৮২৪ জন। প্রবেশনে মুত্তি প্রাপ্ত শিশুর সংখ্যা ৪০৯ জন। চলমান প্রবেশন মামলার সংখ্যা ৬৮টি। সরকারী শিশু পরিবার (বালিকা) সংরাইশ কুমিল্লা ১টি। এর আসন সংখা ১০০টি। এখান থেকে এ পর্যন্ত ৭১ জন এসএসসি ও ৮ জন এইচএসসি পাশ করেছেন। এখন পর্যন্ত পুনর্বাসিত নিবাসির সংখ্যা ৭১১ জন (বিবাহ ও চাকুরী)। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নিবাসীর সংখ্যা ৩৬২জন, প্রশিক্ষণরত ১০ জন।
সরকারী শিশু পরিবার (বালক) দেবিদ্বার কুমিল্লা ১টি। এর আসন সংখা ১০০টি। এখান থেকে এ পর্যন্ত ৭৫ জন এসএসসি ও ১০ জন এইচএসসি পাশ করেছেন। এখন পর্যন্ত পুনর্বাসিত নিবাসির সংখ্যা ২৫১ জন। ৪১ জন দর্জি বিজ্ঞান, ইলেকট্রিক, ওয়েল্ডিংয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে ১১ জন প্রশিক্ষণরত রয়েছেন। সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমে মোট আসন সংখ্যা ১০টি। এর মধ্যে বর্তমান ছাত্র সংখ্যা ১২ জন। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২জন। এ পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষায় ৪৬ জন পরীক্ষার্থী পাশ করেছে। ছাত্রাবাসের ব্যয় বহনকারী সংস্থার নাম এ,বি,সি। প্রতিবন্ধী ও এতিম ছেলে-মেয়েদের কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দাউদকান্দি কুমিল্লায় বর্তমানে ৫৩ জন প্রশিক্ষনার্থী রয়েছেন। এ যাবত ২১ জনকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে সেলাই, কম্পিউটার ও ইলিট্রিক্যাল এবং উড কার্পেটিং। দলিত হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় ৫০ জন হিজড়া ১০০ জন প্রামিত্মক জনগোষ্ঠীকে ৫০ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ শেষে ১৫০ টি সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়। ক্যান্সার, কিডনী, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের অর্থিক কর্মসূচীর আওতায় প্রতিরোগীকে ৫০ হাজার টাকা করে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৫৮৩ জন রোগীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা দুঃস্ত মহিলা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ভোগীদের সংখ্যা ও ভাতার টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।