Published : Friday, 4 February, 2022 at 12:00 AM, Update: 04.02.2022 12:35:58 AM
কুমিল্লা
শিক্ষাবোর্ড মডেল কলেজসহ মোট ১২টি মডেল স্কুল এন্ড কলেজকে বিগত ১৮
সেপ্টেম্বর ২০১৭ খ্রি. তারিখে বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার সরকারিকরণ করে।
সরকারিকরণের যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে এ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৩২ জন
শিক্ষক-কর্মচারীকে সরকারিকরণের তারিখ হতে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা
হয়। বর্তমানে অত্র প্রতিষ্ঠানের ২০ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ভাতাদি চালু
রয়েছে। অবশিষ্ট শিক্ষকগণ বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট
পিটিশন দাখিল করেছেন। তাদের বেতন প্রাপ্তির বিষয়টি মহামান্য আদালতের
এখতিয়ারভুক্ত। সুতরাং অধ্যক্ষ শিক্ষকদের বেতন ভাতা আটকিয়ে রেখেছেন বলে কিছু
সংবাদ পত্র ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে তা
সম্পূর্ণ অসত্য। তাছাড়া আমি যোগদানের পর থেকে প্রতি বছর ভর্তি বাণিজ্য করে
বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তাও বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। কারো নিকট থেকে ভর্তি
বাবদ একটাকা নিয়েছি প্রমাণ দিতে পারলে যে কোন শাস্তি মাথা পেতে নেব। অত্র
কলেজে যোগদানের পর থেকে আমি কলেজের উন্নয়নে রাত দিন কাজ করছি। কলেজের
শ্রেণিকক্ষে ক্লোজ সার্কিট ক্যামরা স্থাপন, কেন্দ্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত
সাউন্ড সিস্টেম স্থাপন, অত্যাধুনিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন,
অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা পদ্ধতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন, অত্যাধুনিক ডিজিটাল ল্যাব,
প্রশ্ন পত্র মডারেশন, উত্তর পত্র মূল্যায়নে কোডিং সিস্টেম চালু, অনলাইনে
রেজাল্ট ম্যানেজমেন্ট সফ্টওয়্যার এর মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশ, ডাইনামিক
ওয়েবসাইট চালু, ডিজিটাল পদ্ধতিতে হাজিরা চালু, অনলাইন পেমেন্ট ব্যবস্থা
প্রবর্তন, স্কুল শাখায় শিক্ষক না থাকায় কলেজ শাখার শিক্ষক ও কিছু অতিথি
শিক্ষক দ্বারা পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া, কলেজ অভ্যন্তরে কোচিং,
প্রাইভেট পড়ানো নিষিদ্ধকরণসহ নানাবিধ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করায়
প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক কার্যক্রম অনেক বেগবান হয়েছে। অন্যদিকে কোচিং ও
প্রাইভেট বাণিজ্য করা কতিপয় শিক্ষকের রোষানলে পড়েছি আমি। ইতোমধ্যে
“বাংলাদেশ গবেষণা ও শিক্ষা নেটওয়ার্ক (বিডিরেন) এর অ্যাসোসিয়েট মেম্বার
হয়েছে কলেজটি। জুম ফ্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ভার্চুয়াল ক্লাস ও অনলাইনে
বিভিন্ন কার্যক্রম চালু করে প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান
সৃষ্টি করেছে। সরাসরি পাঠদানের সাথে সাথে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা এখনও
চালু রয়েছে। অভিভাবক সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার- সিম্পোজিয়াম
আয়োজনের ক্ষেত্রেও কলেজটি সবার নজর কেড়েছে। এ ছাড়া এ বছর বিভিন্ন সরকারি
মেডিকেল কলেজ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক
বিশ^বিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষার্থীর চান্স পাওয়ায় অভিভাবকদের নজর এখন নব্য
সরকারিকৃত এ প্রতিষ্ঠানটির দিকে। উল্লেখ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড সরকারি মডেল কলেজেটি
২০১৮ ও ২০১৯ সালে পর পর দু’বার কুমিল্লা জেলার শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের
স্বীকৃতি অর্জন করেছে। জেলা পর্যায়ে এ কলেজের অধ্যক্ষ হিসেব আমি পর পর ২
বার (২০১৭ ও ২০১৮সালে) শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধানের স্বীকৃতি অর্জন করেছি।
শিক্ষায় আইসিটি ভিত্তিক সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করে সফলতা অর্জন করায়
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালে আমাকে বাংলাদেশ থেকে ইউনেস্কো আইসিটি
অ্যাওয়ার্ড ও বৃত্তির জন্য মনোনয়ন প্রদান করে। আমি দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে
নিরলসভাবে কাজ করি। কাজ আমার নেশা। কিন্তু একশ্রেণির লোকের এ সব পছন্দ নয়।
তারা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। আমাকে হেয় করার জন্য কিছু প্রাক্তন
শিক্ষার্থীকে উসকানি দিয়ে কলেজের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দিতে চাচ্ছে। এরা
মোটেও সফল হবে না। একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী প্রতিবছর নিজেরা ভর্তি
বাণিজ্য করতে না পেরে উল্টো আমার বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ করে।
তদন্ত কমিটি হয়েছে বুধবার। তদন্ত কমিটি বিস্তারিত প্রতিবেদনসহ সংবাদ পত্রে
নামে বেনামে পত্র প্রেরণকারীদের নাম উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে যা
কলেজের নথিতে সংরক্ষিত আছে। প্রতিবছর অভিযুক্তদের সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু
প্রতিবারের মত এবারও তারা ষড়যন্ত্রে নেমেছে। এবারও নতুন ভাবে নারী
কেলেংকারীসহ আরো কিছু অভিযোগ যোগ করে নামে বেনামে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিতে
থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপবাদ ও প্রাক্তন কিছু বিপদগামী
শিক্ষার্থীকে উস্কানি দিচ্ছে। এ ধরনের নামে বেনামে বোর্ড, ডিসি অফিসে,
মন্ত্রণালয়ে প্রতিবছর পত্র দিয়ে থাকে। এসব নেতিবাচক কাজ করে কোন লাভ হবে
না। সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী। তাছাড়া যারা ফেসবুকে আমাকে, আমার সহর্মীদের ও
আমার পরিবার নিয়ে আজে বাজে পোস্ট দিয়ে আমার, আমার পরিবার, সহকর্মী ও
স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে এবং নেপথ্যে যারা
উস্কানি দিচ্ছে তাদের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং শীঘ্রই যথাযথ আইনী
পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সম্মানিত অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রীদের বিভ্রান্ত না
হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ প্রদান করা হলো। ইনশাল্লা ষড়যন্ত্রকারীরা অত্র
কলেজের ও দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। বলে রাখা ভাল দেশের ৬২টি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০২২ সালে নতুন কারিকুলামে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পাঠদান শুরু
করা হবে- যা ২০২৩ সালে সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চালু করা হবে।
দেশের ৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১টি কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড সরকারি
মডেল কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্ট হয়ে সরকার এ
প্রতিষ্ঠানটিকে নির্বাচিত করেছে। এ প্রতিষ্ঠানে এ বছর ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে নতুন
কারিকুলামে পাঠদান করা হবে। আমাকে এবং অত্র প্রতিষ্ঠানের ১১ জন শিক্ষককে
নতুন কারিকুলামের উপর সরকার গত সপ্তাহে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। আমরা নতুন
উদ্যমে এগিয়ে যাব। ষড়যন্ত্রকারীরা নিপাত যাবে ইনশাল্লা।