উদার মুদ্রানীতির কারণে দেশে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি যখন নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে, তখনও বাংলাদেশের অর্থনীতি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। আমাদের অর্থনীতি কখনোই নিম্নমুখী হয়নি। তাই যেভাবেই হিসাব করা হোক না কেনো গত ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ হবে। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কেউ বলতে পারেন, জিডিপি মূল্যায়ন সঠিকভাবে করা হয়নি। আমি তাদের বলতে চাই, আমাদের মূল্যায়নে কখনই আপস করিনি। আপনি যেভাবেই গণনা করুন না কেন জিডিপি এবং মাথাপিছু আয়ের একই তথ্য পাবেন। আমাদের মুদ্রানীতির সম্প্রসারণের কারণে এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের বেশি হবে।
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানি, রাজস্ব এবং রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের আরেকটি খাত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা ঘোষণায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। রেমিট্যান্সটা যদিও আমাদের জিওবিতে আসে না। কিন্তু মাথাপিছু আয়ে আসে। এগুলো হলো আমাদের অর্থনৈতিক এলাকা। এর কোথাও কিন্তু নেগেটিভ গ্রোথ নেই।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গত বাজেট যখন সংসদে উপস্থাপন করেছিলাম, সেসময় আমি উল্লেখ করেছিলাম জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি বেশি হবে। সেটিই কিন্তু হয়েছে। আমি মনে করি এসব কিছু সম্ভব হয়েছে এদেশের মানুষের জন্য।’
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার একনেক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চূড়ান্ত হিসাবে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৫৯১ ডলার।
বিবিএস থেকে গত আগস্টে সাময়িক হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৫৪৪ ডলার প্রাক্কলণ করা হয়েছিলো। যা চূড়ান্ত হিসেবে আরও বেড়েছে। বাজেটে সরকার ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরলেও করোনা মহামারি পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় তা সংশোধন করে ৬ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়।