কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে কৃষক অজি উল্লাহকে (৫০) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী শাহানারা বেগম বাদী হয়ে লক্ষণপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন চৌধুরীসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৬ জনকে আসামি করে মনোহরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন । সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে মামলাটি দায়ের করা হয়। কুমিল্লার সিনিয়র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মুহিতুল ইসলাম মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ময়না তদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে কৃষক অজি উল্লাহর লাশ দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল করিম জানান, হত্যাকান্ডের অভিযোগে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামিরা হলেন, লক্ষণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মহিন উদ্দীন চৌধুরী ও তার ভাই সালেহ আহাম্মদ, একই ইউনিয়নের মড়হ গ্রামের মোঃ রাজু, মোঃ ফারুক, মোঃ মহিন উদ্দীন, মোঃ সাব্বির, মোঃ আব্দুল হালিম, মোঃ হেলাল। আসামিদের ধরতে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।
জানা গেছে, সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মনোহরগঞ্জ উপজেলার মড়হ গ্ৰামে বাড়ির জায়গায় দখল করে রাস্তা নির্মাণের সময় বাধা প্রদান করায় অজি উল্লাহ (৫০) নামে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠে। নিহত অজি উল্লাহ মড়হ পশ্চিম পাড়ার মৃত আব্দুল মুনাফের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
নিহতের কন্যা উম্মে সালমা, পুত্রবধূ জান্নাতুল ফেরদাউস ও স্থানীয় লোকজন জানান, মড়হ গ্রামের পশ্চিম পাড়া রাস্তা সম্প্রসারণ কাজ সম্প্রতি শুরু হয়। সম্প্রসারণের সময় ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়াই কৃষক অজি উল্লাহর বাড়ির জায়গায় মাটি ফেলা হয়। এ সময় ওই কৃষক তার বাড়ির বিপরীতে রাস্তার পশ্চিম পাশে সরকারি জমির দিকে রাস্তা সম্প্রসারনের অনুরোধ জানান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে চেয়ারম্যান ফোন করলে কয়েকটি গাড়িতে ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। পরে চেয়ারম্যান মহিন উদ্দিনের নেতৃত্বে কৃষক অজি উল্লাহর বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। হামলাকালে বেদম মারধরের শিকার হয়ে ঘটনাস্থলেই অজি উল্লাহ নিহত হন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে লক্ষণপুরের চেয়ারম্যান অভিযুক্ত মইন উদ্দিন চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।