ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
স্ত্রীর কিডনিতে বাঁচল স্বামীর প্রাণ
Published : Thursday, 17 February, 2022 at 12:29 PM
স্ত্রীর কিডনিতে বাঁচল স্বামীর প্রাণবিয়ের পর স্বামীকে ভালোবেসে কথা দিয়েছিলেন ‘বাঁচলে একসঙ্গে বাঁচবো, মরলে একসঙ্গে মরবো’। ১২ বছর পর সেই প্রমাণ দিয়েছেন সাইমা আক্তার। তাও নিজের কিডনি দিয়ে। স্ত্রীর একটি কিডনি পেয়ে প্রাণে বাঁচলেন স্বামী ইসমাইল হোসেন। ঢাকার শ্যামলী সিকেডি হাসপাতালের বিছানায় এভাবেই স্বামীর প্রতি ভালোবাসা দেখালেন দুই সন্তানের এ জননী।
বুধবার রাতে সিকেডি হাসপাতালে তাদের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। এতে প্রায় ৬ ঘণ্টা সময় লেগেছে। ইসমাইল হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের মো. ধন মিয়ার ছেলে।

জানা গেছে, ১২ বছর আগে পৌর শহরের দুর্গাপুর এলাকার জমির উদ্দিনের মেয়ে সাইমাকে বিয়ে করেন ইসমাইল। বিয়ের আগ থেকেই ইসমাইল প্রবাসে ছিলেন। প্রবাস থেকে এসে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে হয়। গত তিন বছর ধরে ইসমাইল শারীরিকভাবে অসুস্থ। চিকিৎসা নেয়ায় কিছু সময় ভালো থাকলেও প্রায় সময় সৌদি আরবে অসুস্থ থাকেন। একপর্যায়ে কিডনি সমস্যা ধরা পড়ে তার। পরে তিন মাস আগে চিকিৎসার জন্য দেশে আসেন।

এরপর ঢাকার শ্যামলী সিকেডি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। একপর্যায়ে জানা গেল তার দুটি কিডনি বিকল হয়ে গেছে। বাঁচাতে হলে দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। কিন্তু কিডনি কিনে প্রতিস্থাপন করা খুবই কঠিন হওয়ায় হতাশায় পড়ে পরিবারটি। পরে স্বামীকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেন স্ত্রী। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে স্বামী ইসমাইলের সঙ্গে স্ত্রীর কিডনি মিলে যায়। পরে বুধবার তাদের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। বর্তমানে দুজনই সুস্থ রয়েছেন।

সাইমা আক্তার বলেন, স্বামী কিডনির কারণে মারা গেলে আমি কাকে নিয়ে বাঁচতাম। তাই স্বামীকে কিডনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এখন দুজনই একটি করে কিডনিতে বাঁচব। এভাবে আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রাখেন।

উপজেলা মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন বলেন, আসলে এটি একটি বিরল ঘটনা। এমন স্বামীভক্ত নারী সহজে দেখা মেলে না। আল্লাহ তাদের দুজনকে সুস্থ রাখুক।