ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
প্রয়োজনেই বাইক চালাচ্ছেন কুমিল্লার নারীরা
Published : Wednesday, 16 February, 2022 at 12:00 AM, Update: 16.02.2022 1:36:10 AM
প্রয়োজনেই বাইক চালাচ্ছেন কুমিল্লার নারীরাতানভীর দিপু:
অফিস-আদালতে, স্কুল-কলেজ কিংবা আড্ডায় যেতে ব্যক্তিগত বাহন হিসেবে কুমিল্লার নারীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় উঠছে স্কুটার। পরিমিত খরচ আর নির্ঝঞ্জাট চলাচলে গৃহিনী থেকে শুরু করে স্কুলগামী ছাত্রীরা পর্যন্ত এখন বাইকার। কুমিল্লা শহরের রাস্তায় নারী বাইকারদের চলাচল এখন নিয়মিত দৃশ্য। পেশাদার বাইকারদের মতই পরিবারের সদস্য আর বন্ধুদের নিয়ে নগরীর এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ছুটেছেন তারা। এই দলে আছেন নানা বয়সী, নানান শ্রেণি-পেশার নারী। তাদের আছে সুদূর নেত্রকোনা থেকে কুমিল্লায় স্কুটারে করে লংরাইডের গল্পও। এদিকে যারা অনলাইনে নানান ক্ষুদ্র ব্যবসার সাথে জাড়িত তাদের পণ্য ডেলিভারির জন্যও অনেকে ব্যাক্তিগত বাইক বা স্কুটার নিতে আগ্রহী হচ্ছেন।
সন্তানকে স্কুলে আনা নেয়ার সুবাদে নিজের বাইক চালানোর শখ পূরণের গল্প। কেউ নিজের স্কুটার নিয়ে ছুটছেন, আর যারা স্কুটার চালানো শিখছেন- তারা বসে আছেন পেছনের সিটে। কেউ বোরকা-হিজাব, কেউ বা বাইকিংএর জ্যাকেট নিয়ে চলাচল করছেন সাবলীল ভাবে। ব্যাক্তিগত বাহন হিসেবে নারীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় উঠছে স্কুটার। পরিমিত খরচ আর নির্ঝঞ্জাট চলাচলে গৃহিনী থেকে শুরু করে স্কুলগামী ছাত্রীরা পর্যন্ত এখন বাইকার। কুমিল্লা শহরের রাস্তায় নারী বাইকারদের চলাচল এখন দৈনন্দিন দৃশ্য।
স্কুটার ট্রেইনিং সেন্টারের প্রশিক্ষক স্বপ্নীল সুলতানা জানান, কুমিল্লা সিটিতে এখন অন্তত ৩ শ জন নারী এখন নিয়মিত স্কুটার চালিয়ে নিজের কাজ কর্ম সারছেন। অনেকেই শিখছেন। পেশাজীবী নারীরা ছাড়াও শিক্ষার্থী ও সৌখিন নারীরাও ঝুঁকছেন স্কুটারের প্রতি। বাইকিং এর নিয়ম মেনে এবং ট্রাফিক আইন মেনে বাইক বা স্কুটার চালাতে পারলে নারীদের জীবন যাত্রা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
শুধু বিশেষ দিন নয়, নিয়মিত স্কুল-কলেজ- অফিসে যেতেও বাইক বা স্কুটার ব্যবহার করছেন নারীরা।  পারিবারিক বিভিন্ন যোগাযোগ, বাজার সদাই বা বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে নিয়ে আসা সবই হচ্ছে স্কুটারে। অভিভাবকদের কাছ থেকেও পাচ্ছেন সমর্থন সহযোগিতা। নগরীর পুরাতন চৌধুরী পাড়ার বাসিন্দা বিউটিশিয়ান তানজিনা সোনিয়া জানান, পরিবার থেকে শুরুর দিকে সবাই মেনে নেয় নি। আমার সন্তানকে মাদ্রাসায় নিয়ে আসার জন্য আমি মূলত স্কুটার ব্যবহার শুরু করি। আমি বাইকিং শেখার পর বোরকা হিজাব পরেই চলাচল শুরু করি, তখন বিষয়টি সবাই ইতিবাচক হিসেবেই নেয়। এখন অনেকেই বিষয়টি সমর্থন করেন।
নগরের যানজট এড়িয়ে সময় বাঁচানোর জন্যই স্কুটারের ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে বলে জানালেন লেডি বাইকাররা। এছাড়া রিকশা ও ইজিবাইকের অতিরিক্ত ভাড়া বাঁচানোর জন্য স্কুটার খুবই উপকারী। স্কুটার ব্যবহারকারীরা জানালেন, সব বাইকারদেরেই উচিত ট্রাফিক আইন মেনে চলা। নেয়া উচিত সরকারি লাইসেন্স। নিরাপত্তার জন্য হেলমেট এবং গ্লাভস ব্যবহার বাঞ্চনীয়। উৎসাহীদের নিয়ে বাইক চালানোর নিয়ম কানুন- ট্রাফিক আইন ও সেফটি বাইকিং প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন ট্রেইনাররা।  নেত্রকোনা থেকে কুমিল্লায় পড়তে আসা ভিক্টোরিয়া নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী পুতুল আক্তার ডলি জানান, নেত্রকোনা থেকে স্কুটার চালিয়ে কুমিল্লায় আসার অিিভজ্ঞতা আছে আমার। কুমিল্লায় অনেকে মেয়েরাই বাইক চালায়, যা দেখে খুবই ভালো লাগছে। আমিও নিয়মিত স্কুটারে করে কলেজে আসা যাওয়া করি। ট্রাফিক পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করে থাকেন। কুমিল্লায় স্কুটার নিয়ে চলাচল খুবই সহজ মনে হয় আমার কাছে।
মোটর বাইক কিংবা স্কুটার নিয়ে রাস্তায় বের হলে এখনো মাঝে মাঝে নারীদের শুনতে হয় কটুক্তি। তাদের প্রত্যাশা - বাইকিং এবং রাইডিংয়ে সবার সহযোগিতা নিরাপদ ও সহজ হবে এই পথচলা। কুমিল্লা জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এমদাদুল হক বলেন, সবাইকে আইন মেনে বাইক বা স্কুটার চালাতে হবে। সবাইকে অবশ্যই ট্রাফিক আইন ও লাইসেন্সের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। আইন নারী-পুরুষ বোঝে না। তবে ছেলেদরে তুলনায় মেয়ে হেলমেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি। আর নারী বাইকাররা কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে তাদেরকে সহযোগিতার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।