ডাকাতিয়া নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ভেঙ্গে পড়ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি
Published : Friday, 18 February, 2022 at 12:00 AM
মোঃ হুমায়ুন কবির মানিক ঃঃ
লাকসামে ড্রেজার মেশিন দিয়ে ডাকাতিয়া নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে অবাধে বালু উত্তোলনে ভেঙ্গে পড়ছে ঘরবাড়ী ও ফসলি জমি। নদীর বালু উত্তোলন করে পাইপের মাধ্যমে ভরাট করা হচ্ছে পুকুর-জলাশয়। এতে নদী তীরবর্তী ঘরবাড়ি, গবাদি পশুর খামার, কৃষি জমিসহ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি বাড়িও নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। নদীর তীরবর্তী উপজেলার বাকই ইউনিয়নের দুপচর পূর্বপাড়া গ্রামে এ দৃশ্য দেখা গেছে। এ দিকে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ড্রেজার বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে। একই সময় তারা ড্রেজার মেশিন বন্ধের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গণস্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগও দিয়েছেন।
ভূক্তভোগী দুপচর গ্রামের স্বজল সিংহ, নেপাল সিংহ, রতন সিং, তৃষ্ণা বড়য়াসহ এলাকাবাসী জানান, গত কয়েকদিন ধরে আমাদের বাড়ির পাশে নদীতে ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে মোটা পাইপ লাগিয়ে তপন সিংহের পুকুর ভরাট করা হয়েছে। এতে একদিকে নদীর ওই অংশে বিরাট গর্ত সৃষ্টি হয়ে পাশের বসতবাড়ি, গবাদি পশুর খামার, মহাশ্মশানে যাওয়ার রাস্তা নদীগর্ভে ভেঙ্গে পড়ছে। এর ফলে মহাশ্মশানে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। এভাবে ড্রেজিং অব্যাহত থাকলে গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে। অন্যদিকে, ড্রেজারের বালু যুক্ত পানি কৃষি জমিতে সয়লাব হয়ে চলতি রোপা আমনসহ অন্যান্য ফসল বিনষ্ট হচ্ছে।
বাকই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল জানান, শুনেছি এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প। কে করছে, কত টাকার কাজ কিছুই জানেন না তিনি।
এ বিষয়ে লাকসাম উপজেলা নির্বাহি অফিসার একেএম সাইফুল আলম জানান, প্রকল্পটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের, তারাই ভালো বলতে পারবেন। আমিও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, পাউবোর ঠিকাদার ফারুক চৌধুরী ড্রেজিংয়ের কাজটি করছেন। তবে মাটি ব্যবস্থাপনার কাজ স্থানীয় প্রশাসনের। তাছাড়া একস্থান থেকে একটানা মাটি কাটার কোন নিয়ম নেই। আমাদের ডিজাইন মত মাটি কেটে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়। ডিজাইনের বাইরে কাটা হলে বিল পাবে না। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
এদিকে, অপরিকল্পিতভাবে পরিচালিত ড্রেজারটি বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী ইতিমধ্যে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন। এছাড়াও এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরিত একটি আবেদন পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিয়েছেন।