ওমিক্রনের
দাপট পেরিয়ে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরও একটু কমে এসেছে। স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ৩৪ হাজারের
বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ৩ হাজার ৫৩৯ জন জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ
ধরা পড়েছে। তাতে সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ। আগের দিন এই
হার ১২ দশমিক ২০ শতাংশ ছিল।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারে
চলতি বছরের শুরু থেকে দেশে আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকে দ্রুত। গত ১২ জানুয়ারি
নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১১ শতাংশ ছাড়ায়। ২৮ জানুয়ারি তা
পৌঁছায় ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশের রেকর্ড উচ্চতায়।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ
পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ২৬ হাজার ৫৭০ জন। গত এক
দিনে আরও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাতে মহামারীতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮
হাজার ৯০৭ জন হয়েছে।
সরকারি হিসাবে এই সময়ে সেরে উঠেছেন ১১ হাজার ৮০০ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত ১৭ লাখ ২৭ হাজার ৮৬৬ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
সে
হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৬৯ হাজার ৭৯৭ জন। অর্থাৎ
এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। তবে উপসর্গবিহীন
রোগীরা এই হিসাবে আসেনি।
বাংলাদেশে মহামারীর শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে।
করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা
দুইশর ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে।
এরপর আসে আরেক নতুন
ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এক
পর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
এরপর সংক্রমণ ধীরে
ধীরে কমতে শুরু করে, ৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের
নিচে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তা পাঁচ হাজারের নিচে নামে।
মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ২ হাজার ৬১৪ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৬৭ শতাংশের বেশি।
যে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ এবং চারজন নারী। তাদের মধ্যে সাতজন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা।
এছাড়া
চট্টগ্রাম বিভাগের দুইজন,রাজশাহী বিভাগের পাঁচজন, খুলনা বিভাগের চারজন,
সিলেট বিভাগের একজন এবং রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন একজন।
তাদের ১১
জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, চারজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, তিনজনের বয়স ৪১ থেকে
৫১ থেকে বছর এবং দুই জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা
ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬
হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০
সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫
অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক
দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৮ লাখের ৫২ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪১ কোটি ৮০ লাখ।