শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনেও সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম চালু রাখা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; নিবন্ধন করা না থাকলেও কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়া যাবে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সারাদেশের সব সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা এবং সব পৌরসভার মেডিকেল অফিসারদের এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
২৬ জানুয়ারি সারাদেশে ১ কোটি মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। ওই দিনের ভিড় কিছুটা কমাতে শুক্রবারও টিকাদান কেন্দ্র খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. শামসুল হকের পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়, ২৬ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান কার্যক্রম ঘিরে দেশজুড়ে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে এবং টিকার জন্য টিকাদান কেন্দ্রে মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে।
“জনমনে সৃষ্ট এই ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও টিকার চাহিদা পূরণের নিমিত্তে শুক্রবার সারাদেশের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন সেন্টার খোলা রেখে এবং প্রয়োজনে অতিরিক্ত কেন্দ্র বা বুথের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।”
জানতে চাইলে ডা. শাসমুল হক বলেন, “এখন টিকাদান কেন্দ্রে প্রচুর ভিড় দেখা যাচ্ছে, এ কারণে শনিবারের ভিড় কমাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
“এছাড়া আগামী শনিবার প্রথম ধাপের টিকা প্রচুর পরিমাণে দেওয়া হবে। যেহেতু টিকা নেওয়ার জন্য মানুষের প্রচুর চাপ আছে, এজন্য শুক্রবারও টিকা দেওয়া হবে। টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন বা নিবন্ধন করেননি এমন সবাই টিকা পাবেন।”
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে একদিনে ১ কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওইদিন জানানো হয়, ২৬ ফেব্রুয়ারির পর প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হবে না।
ওই ঘোষণার পর সারাদেশের টিকাদান কেন্দ্রগুলোয় ভিড় বাড়তে থাকে। বুধবার সাভারে করোনাভাইরাসের টিকা কেন্দ্রে প্রথম ডোজ টিকা প্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড় সামলাতে পুলিশ লাঠিপেটাও করে।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে শাসমুল হক বলেন, “প্রয়োজনের নিরিখে, খুবই যদি প্রয়োজন থাকে তাহলে আমরা ক্যাম্পেইন করে দেব। তাছাড়া আমাদের রুটিন টিকাদান চলবে। কিন্তু ২৬ তারিখের পর আর গণটিকাদান কর্মসূচি থাকবে না।”
বাংলাদেশে গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া শুরু হয়। দুই মাস পর ৮ এপ্রিল শুরু হয় দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম। আর গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এর মধ্যে গতবছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে ৭৬ লাখ ডোজের বেশি টিকা দেওয়া হয়েছিল এক দিনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, বুধবার পর্যন্ত সারাদেশে ১০ কোটি ৬৫ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, যা মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের বেশি।
তাদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৮ কোটি ৬ লাখ মানুষ। আর বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ৩৪ লাখ ৪২ হাজারের বেশি মানুষ।