বাংলাদেশের ছেলেরা প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছে ১৯৯৯ সালে। অভিষেক আসরেই পাকিস্তানকে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় তামিম-সাকিবরা এখন দাপটের সঙ্গে ওয়ানডে খেলছে। কিন্তু মেয়েরা এশিয়া কাপ জিতে সর্বোচ্চ সাফল্য অর্জন করলেও ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারছিল না দীর্ঘদিন। সেই অপূর্ণতা ঘুচেছে নিউজিল্যান্ডে আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপে।
কিউইদের কন্ডিশনে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়েছে। আগামী ৫ মার্চ শুরু হবে নারী দলের মিশন। প্রথমবার হওয়াতেই বিশ্বকাপটা স্মরণীয় করে রাখতে চান সালমা-নিগার সুলতানারা।
বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা আইসিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমরা এই বিশ্বকাপটাকে স্মরণীয় করে রাখতে চাই। কারণ এটা আমাদের প্রথম বিশ্বকাপ। নিজেদের সেরাটা দিতে চাই এখানে। আমাদের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে, যারা আমার কাজটা সহজ করে দেয়। তারা জানে, দলে তাদের কত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। মূল ম্যাচে কী করতে হবে, সেটাও তাদের জানা। আশা করি, মূল ম্যাচে আমরা ভালো করবো।’
নিউজিল্যান্ডে গিয়ে সব দলকেই কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারতের মতো দলগুলোও দিশা হারিয়ে ফেলে কিউই কন্ডিশনে। এমন প্রতিকূল কন্ডিশনেই গত জানুয়ারিতে ইতিহাস গড়ে ছেলেদের দল। মুমিনুল হক, লিটন দাস, এবাদত হোসেনদের দারুণ পারফরস্যান্সে ১১ বছর পর এশিয়ার কোনও দল নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয়ের কীর্তি গড়েছে। মুমিনুল-এবাদতদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভালো করতে চায় মেয়েরাও, ‘ছেলেদের দলের বেশ কয়েক জনের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক আছে, এখানকার কন্ডিশনে খেলার অনেক অভিজ্ঞতা তারা ভাগাভাগি করেছেন এবং জানিয়েছেন এখানে কীভাবে খেলতে হবে। আমার মনে হয় অনুশীলন ম্যাচ ও বিশ্বকাপের ম্যাচে এসব সাহায্য করবে।’
৫ মার্চ থেকে শুরু হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ লড়াই। তার আগে লিংকনে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে নিগাররা। ২৮ ফেব্রুয়ারি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ও ২ মার্চ পাকিস্তানের বিপক্ষে। বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার নিজেদের প্রস্তুতিতে ভীষণ সন্তুষ্ট, ‘আগে যেমনটা বললাম, আমরা সব প্রস্তুতি এখানে নিয়ে নিতে চাই। আমাদের বিশ্বকাপের সুযোগটা ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে। আপনি যদি আমাদের স্কোয়াড দেখেন, অনেক অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশেল আছে, যারা অতীতে ভালো করেছে। আমরা প্রস্তুতি ম্যাচের সব সুযোগ নিতে চাই যা মূল ম্যাচে কাজে লাগাতে পারবো।’
পাশাপাশি বাংলাদেশের অধিনায়ক এবারের বিশ্বকাপকে নিজেদের পারফরম্যান্সের জন্য ভালো সুযোগ হিসেবেও দেখছেন, ‘আমার মনে হয় আমাদের সবার জন্য এটা বড় সুযোগ। এটার জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করে আসছি এবং এটা আমাদের প্রথম বিশ্বকাপ। আমরা যদি এখানে ভালো করতে পারি, বাংলাদেশের ক্রিকেটের সেটা দারুণ মুহূর্ত হবে।’
আগামী ৪ মার্চ শুরু হবে নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ৫ মার্চ, প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। পরের ম্যাচ ৭ মার্চ, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ নারী দল: নিগার সুলতানা জ্যোতি (অধিনায়ক), সালমা খাতুন, রুমানা আহমেদ, ফারজানা হক পিংকি, জাহানারা আলম, শামীমা সুলতানা, ফাহিমা খাতুন, রিতু মনি, মুর্শিদা খাতুন, নাহিদা আক্তার, শারমিন আক্তার সুপ্তা, লতা মণ্ডল, শোভনা মোস্তারি, ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণা, সুরাইয়া আজমীম ও নুজহাত তাসনিয়া।