ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব দরিদ্র দেশগুলোতে বেশি: বিশ্বব্যাংক
Published : Saturday, 5 March, 2022 at 12:00 AM
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে বিপর্যয় ডেকে আনছে এবং এর ক্ষতিকর প্রভাবে দরিদ্র দেশগুলোই বেশি ভুগছে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস। তবে যুদ্ধ যত মানুষের প্রাণ কাড়ছে, সেটাই সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (৪ মার্চ) বিবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশ্বব্যাংক প্রধান বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ এমন এক খারাপ সময়ে আসলো, যখন আগে থেকেই বিশ্ব মূল্যস্ফীতির সংকটে ছিল। তিনি বলেন, ইউক্রেন সীমান্তের বাইরেও এই যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব পড়ছে। জ্বালানির দাম বাড়ছে, বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। আর এগুলোতে গরিব দেশগুলোই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মালপাসের কথায়, যুদ্ধের জন্য খাদ্যের দাম বাড়ছে। এটি দরিদ্র দেশগুলোর জন্য সত্যিকারে সমস্যা ও চিন্তার বিষয়।
রাশিয়া-ইউক্রেন উভয়ই বিশ্বের অন্যতম খাদ্য উৎপাদক। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের তথ্যমতে, বিশ্বে সূর্যমুখী তেল উৎপাদনে ইউক্রেন প্রথম ও রাশিয়া দ্বিতীয়। এ দুই দেশে বিশ্বের প্রায় ৬০ শতাংশ সূর্যমুখী তেল উৎপাদন হয়।
এছাড়া জেপি মরগানের হিসাবে, বিশ্বের অন্তত ২৮ দশমিক ৯ শতাংশ গম উৎপাদন হয় ইউক্রেন-রাশিয়ায়। যুদ্ধের কারণে এরই মধ্যে শিকাগো ফিউচার এক্সচেঞ্জে গমের দাম ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
রাশিয়ার ক্ষেত্রে এসব পণ্য সরবরাহ বন্ধ হওয়ার কারণ ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা। আর হামলার মুখে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইউক্রেনের সরবরাহও আপাতত শূন্য। বিশ্বব্যাংক প্রধানের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে পণ্য সরবরাহ বন্ধের ক্ষতি দ্রুত পূরণের কোনো রাস্তা নেই। তাই দাম বাড়ছে।
একই কথা রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, বিশেষ করে পশ্চিম ইউরোপের ক্ষতির বিষয়টি। ডেভিড মালপাসের অভিযোগ, রাশিয়াকে বাদ দিয়ে কীভাবে পর্যাপ্ত বিদ্যুতের ব্যবস্থা হবে, তা নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করেটি ইউরোপীয় দেশগুলো। এ অঞ্চলের প্রায় ৩৯ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে, আর তার বড় উৎস রাশিয়া থেকে আসা তেল ও গ্যাস।
বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বাড়ালে রাশিয়া স্থায়ীভাবে কিছু বাজার হারাতে পারে। এভাবে আয় কমে যাওয়ায় সেখানে জীবযাত্রার মান যেমন কমবে, তেমনি রুবলের দরপতন এবং মূল্যস্ফীতিও বাড়বে। এই যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার এ ধরনের আরও ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।