জহির শান্ত ||
কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিপুল বিজয় পেয়েছে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ প্যানেল। এবারের নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি, সহ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ১১টি পদেই জয় পেয়েছেন এই প্যানেলের প্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। আইনজীবী-ভোটার ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কুমিল্লা বারে আওয়ামী লীগের ঐক্যের কারণেই এবার বিপুল বিজয় পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ প্যানেলের প্রার্থীরা। ভবিষ্যতেও যদি ঐক্য অব্যাহত থাকে তাহলেও জয়ের ধারাও অব্যাহত থাকবে। এবারের নির্বাচনে জেলা আইনজীবী সমিতির ১১৫৪ জন ভোটারের মধ্যে ১১০৭জন ভোটার ভোট প্রয়োগ করেন।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী সভাপতি পদে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ প্যানেল থেকে সভাপতি মোঃ আহছান উল্লাহ্ খন্দকার ৬২১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেলের প্রার্থী মো. তারেক আবদুল্লাহ পেয়েছেন ৪৬৭ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে মো: আবু তাহের ৫৩২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি খন্দকার মিজানুর রহমান পেয়েছেন ৫১৪ ভোট।
সহ-সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এডভোকেট নুরুল ইসলাম ৬৫৩ ভোট এবং আব্দুল মান্নান ৫৬২ পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।  তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ইয়াকুব আলী পেয়েছেন ৪৫৩ ভোট ও ওহিদুর রহমান সরকার পেয়েছেন ৪৩৫ ভোট।
সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এডভোকেট মোঃ শাহজাহান সিরাজ পেয়েছেন ৫৮১ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এডভোকেট ইয়াকুব আলী চৌধুরী পেয়েছেন ৫০৯ ভোট, ট্রেজারার পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো ঃ আমির হোসেন খান পেয়েছেন ৬৩৬ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল বাতেন মজুমদার পেয়েছেন ৪৪৯ ভোট। লাইব্রেরি সেক্রেটারি পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোঃ লোকমান আহমেদ পেয়েছেন ৫৭৭ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সঞ্জয় কুমার সরকার পেয়েছেন ৫১২ ভোট। এনরোলমেন্ট সেক্রেটারি পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আব্দুস সবুর পেয়েছেন ৬২৯ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সৈয়দ শাহীদুল আহসান টিপু পেয়েছেন ৪৪৮ ভোট। আইটি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এ এম এম মঈন পেয়েছেন ৬৫১ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ শাহজাহান ভূইয়া পেয়েছেন ৪৫৩ ভোট। রিক্রিয়েশন সেক্রেটারি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শাহাবুদ্দিন পেয়েছেন ৭২৫ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাজী আব্দুল কাইয়ুম মিন্টু পেয়েছেন ৩৪৬ ভোট। সদস্য পদে ৫টির মধ্যে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ প্যানেলের প্রার্থী এড. আব্দুল হান্নান লিটন ৬২৫ ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছেন, ওমর খালেদ ৬১৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন, তাহমিদা আক্তার সুপ্তি ৫৮৭ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন। অপরদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেল সমর্থিত প্রার্থী এডভোকেট ফাহিমা আক্তার ৫৫৬ ভোট পেয়ে চতুর্থ ও মোঃ নুরুল ইসলাম ৫২০ ভোট পেয়ে পঞ্চম হয়েছেন।এ ছাড়াও সাধারণ সম্পাদক পদে একক স্বতন্ত্র প্রার্থী এড. মোহাম্মদ ইসলাম ইবনে সাইখ পেয়েছেন ৪৪ ভোট।
ফলাফল ঘোষণার পর কুমিল্লার আদালত চত্ত্বরে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বিজয়ী প্রার্থী ও তাদের সমর্থক-আইনজীবীরা সেখানে বিজয় মিছিল করেন। এসময় নির্বাচিতদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ প্যানেলের বিপুল বিজয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আবদুল মমিন ফেরদৌস বলেন, কুমিল্লা বারে আওয়ামী আইনজীবীদের মাঝে যে বিরোধ ছিলো- তা মিটিয়ে ফেলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা এখন ঐক্যবদ্ধ। আর সেই ঐক্যের ফলে এবারের নির্বাচনে আমরা বিপুল বিজয় অর্জন করতে পেরেছি। তাছাড়া সাধারণ আইনজীবীরাও আমাদের প্রতি আস্থাশিল ছিলেন। যেহেতু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে- আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা বারের নেতৃত্বে আসলে উন্নয়ন হবে। আশা রাখছি তাদের আস্থার প্রতিদান দিতে পারবে নবনির্বাচিত পরিষদ।