পর্যাপ্ত ঘুম সুস্থ জীবনের অন্যতম প্রধান চাবিকাঠি। প্রতিদিন অন্তত ছয় থেকে সাত ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম না হলে দেখা দিতে পারে একাধিক শারীরিক ও মানসিক রোগ। টানা কয়েক রাত কম ঘুমালে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, বিষণ্নতা ভর করা এবং উদ্বেগ বেড়ে যেতে পারে। তাই শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই।
আজ বিশ্ব ঘুম দিবস বা ওয়ার্ল্ড স্লিপ ডে। প্রতি বছর মার্চ মাসের তৃতীয় শুক্রবার দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো, ‘গুণগত ঘুম, সুস্থ মন, সুখী পৃথিবী’। সব বয়সেই ঘুম প্রয়োজন। শৈশবে, কৈশোর, তারুণ্য এবং বার্ধক্যে ঘুমের চাহিদায় ভিন্নতা থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের মতে, ৬ থেকে ৯ বছর বয়সী শিশুদের ৭-৯ ঘণ্টা, ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের ৮-১০ ঘণ্টা, বয়ঃসন্ধির সময়টাতে অনেকেরই প্রায় ১১ ঘণ্টা ঘুমায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়সী মানুষের রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। তবে নিয়মিত ৬ ঘণ্টা ঘুমালেও স্বাস্থ্য ঠিকঠাক থাকতে পারে। ৬৫ বছরের চেয়ে বেশি বয়সীদের ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম হলে ভালো। অনেকে আছেন দিনে অল্প সময় ভাতঘুম দিয়ে রাতে ৫ ঘণ্টা ঘুমিয়েও সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন।
রাতে অনেকেই আছেন যাদের নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম হয় না। অনিদ্রায় ভুগেন। যাকে বলা হয় ‘ইনসোমনিয়া’। আধুনিক পৃথিবীতে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের প্রতি তিনজনের একজন ঘুমের সমস্যায় ভুগছে। প্রতিদিন ছয় থেকে সাত ঘণ্টার কম সময় ঘুমালে আলঝেইমার, ক্যানসার, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উদ্বিগ্নতা, হতাশা, স্মৃতি হারিয়ে ফেলা, এমনকি আত্মহত্যার প্রবণতাও তৈরি হয়।
ঘুম আমাদের মেটাবলিজম সিস্টেম এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। কোয়ালিটি লাইফের জন্য প্রতিদিন ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। রাতে ঘুমিয়ে ভোরের দিকে উঠে অল্প করে ব্যায়াম করতে পারেন। এক্ষেত্রে অ্যারোবিক ব্যায়ামগুলো উপকারী। সারারাত জেগে ভোরে ঘুমানো ঠিক নয়। মনে রাখবেন, রাতের ঘুমই সেরা। দিনে ঘুমানো মন্দের ভালো।