নিজস্ব
প্রতিবেদক: দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নতুন এক
ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে এটিই
বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়। কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর চতুর্থ
প্রতিপক্ষের সঙ্গে দেশের বাইরে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে দেশের
বাইরে এটি সপ্তম সিরিজ জয়।
বুধবার (২৩ মার্চ) সেঞ্চুরিয়নে টস জিতে
প্রথমে ব্যাটিং করে দক্ষিণ আফ্রিকা সব উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান সংগ্রহ করে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়
বাংলাদেশ।
তামিম ইকবাল ৮২ বলে ৮৭ রান ও সাকিব ২০ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। এ ছাড়া লিটন দাস ৫৭ বলে ৪৮ রান করে আউট হন।
এর
আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের শুরুতে কাইল ভেরাইনার সঙ্গে ৬.৫
ওভারে ৪৬ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক কুইন্টন
ডি কক। এরপর মাত্র ৩৭ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে
দক্ষিণ আফ্রিকা।
আফ্রিকা শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
তার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন প্রোটিয়া ওপেনার কুইন্টন ডি কক। আগের
ম্যাচে ৬২ রান সাবেক এই অধিনায়ককে এদিন ১২ রানে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। তার
বিদায়ে ৬.৫ ওভারে ৪৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় আফ্রিকা।
এরপর জোড়া আঘাত হানেন পেসার তাসকিন আহমেদ। তার শিকার হয়ে মাত্র ৩ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন কাইল ভেরেইনি ও ওপেনার জানেমান মালান।
তিন ম্যাচ সিরিজেরে প্রথম খেলায় ওপেনিংয়ে ব্যাট করা ভেরেইনাকে ২১ রানে এলবিডব্লিউ করেন তাসকিন আহমেদ।
বুধবার
অঘোষিত ফাইনালে তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ভেরেইনা। বলটি তার ব্যাটে
লেগে এক ড্রপ খেয়ে স্টাম্পে আঘাত হানে। এদিন তৃতীয় পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে
১৬ বলে ৯ রান করার সুযোগ পান দক্ষিণ আফ্রিকার এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান।
তাসকিনের
পর দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। তার বলে এলবিডব্লিউ
হয়ে ফেরেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টিম্বা বাভুমা। ১১ বল খেলে মাত্র ২ রানে
ফেরেন প্রোটিয়া এই অধিনায়ক। তার বিদায়ে ১৫.৫ ওভারে ৭১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে
চাপের মধ্যে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
সাকিবের পর আফ্রিকা শিবিরে আঘাত
হানেন তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম। তার বলে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে ক্যাচ
তুলে দিয়ে ফেরেন ভেন দার ডুসেন। ১৮.১ ওভারে দলীয় ৮৩ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান
হিসেবে ফেরেন ডুসেন। এরপর পিটোরিয়াস, মিলান ও রাবাদাকে ফেরান তাসকিন
আহমেদ। ২৯ ওভার শেষে ১২৬ রানে ৮ উইকেটের পতন হয় দক্ষিণ আফ্রিকার। পরে ৩৪.৪
ওভারে নিগিদি সাকিবের শিকার হলে স্বাগতিকদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৪। শেষদিকে
মাহারাজ ঝড়ো ইনিংস খেলেন। পরে তিনি রান আউট হলে ৩৭ ওভারে ১৫৪ রানে গুটিয়ে
যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাসকিন মাত্র ৩৫ রানে ৫ উইকেট তুলে নেন। ম্যাচ অব দ্য
ম্যাচ হয়েছেন তাসকিন।
অর্থমন্ত্রীর অভিনন্দন:
দক্ষিণ আফ্রিকার
বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেই প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে প্রানঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন সাবেক আইসিসি সভাপতি ও
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, এফসিএ, এমপি। মাননীয় অর্থমন্ত্রী আজ এক
অভিনন্দন বার্তায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সকল খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, কোচসহ
সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানান ।
অভিনন্দন বার্তায়
অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি মাইলফলক
দিন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ধারাবাহিক এ পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে আমাদের
জন্য অত্যন্ত আনন্দের ও গর্বের। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার
বিপক্ষে বাংলাদেশের এ ঐতিহাসিক জয় আমাদের খেলোয়ারদের দৃঢ় সক্ষমতার প্রমাণ।
তিনি তাসকিন আহমেদের ৫ উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আটকে রাখা এবং তামিম-লিটনের
ব্যাটিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে লড়াইয়ের সুযোগও না দেওয়ায় ভূয়সী প্রশংসা করেন।
আগামী দিনগুলোতেও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এই অসাধারণ নৈপুণ্য অব্যাহত থাকবে
বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।