Published : Thursday, 31 March, 2022 at 12:00 AM, Update: 31.03.2022 1:16:11 AM
নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লার পাঁচথুবি ইউনিয়নের পশ্চিম মাঝিগাছা এলাকায় মাসুক
হত্যা মামলায় ১০ দিন পরেও অগ্রগতি নেই কোন। ঘটনার দিন হাসপাতাল থেকে দুই
আসামি গ্রেপ্তারের বাইরে মামলার আর কোন আসামিকে আর গ্রেপ্তার করতে পারেনি
পুলিশ। নিহত মাসুকের পরিবারের দাবী, মামলার আসমিরা এখনো ধরাছোঁয়ার মধ্যে
থাকলেও তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারছে না পুলিশ। এদিকে আসামিরা এখলো
গ্রেপ্তার না হওয়ায় অনিরাপত্তায় ভুগছে মাসুকের স্ত্রী রুবি আক্তার ও তার
পরিবার। মাসুকের বড় ভাই মামলার বাদী মোঃ জালালকেও অপরিচিত নাম্বার থেকে
দেয়া হচ্ছে হুমকি ধমকি। গত ২০ মার্চ মাসুক হত্যার পর ৮ জনকে আসামি করে
মামলা করে তার বড় ভাই মোঃ জালাল। মামলা এক নম্বর আসামি মোঃ নাছির ও পাঁচ
নম্বর আসামি মামুন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার রয়েছে। মামলার অন্য পলাতক
আসামিরা হলো- স্থানীয় সফিকুর রহমান ওরফে মালু মিয়ার ছেলে অহিদ মিয়া, তার
ভাই কবির হোসেন, মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে আশেক, মোঃ নাছিরের মেয়ে জেসি এবং
নাছিরের স্ত্রী রানী বেগম।
কুমিল্লা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
সোহান সরকার জানান, মাসুক হত্যার বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছে পুলিশ।
আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়েও কাজ করছে তারা।
মাসুকের স্ত্রী রুবি আক্তার
জানান, ১৮ মার্চ মামলার প্রধান আসামি নাছির ও অহিদ মিয়াসহ অন্যান্যরা মিলে
আমার স্বামী মাসুককে হত্যা করে। এই ঘটনার পর এলাকাবাসী নাসির ও অহিদকে আটক
করে মারধর দিয়ে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। পরে হাসপাতাল থেকে পুলিশ
নাছির ও মামুন নামে দুই আসামিকে আটক করলেও অন্যতম প্রধান আসামি অহিদ
হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। এর পর থেকে অভিযুক্ত আর কাউকে আটক করতে পারে নি
পুলিশ।
মামলার বাদী মোঃ জালাল বলেন, আমার ভাই মাসুক হত্যার ঘটনায় আট
জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছি। এর মধ্যে এক নম্বর আসামি নাছির এবং পাচ
নম্বর আসামি মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় আমরা
এখন অনিরাপত্তায় ভুগছি। আমার ভাই মাসুক দুইটি ছোট ছোট মেয়ে রেখে হত্যার
শিকার হলো, তার স্ত্রী অসুস্থ- তারাও অনিরাপদ। আমার স্ত্রীর নাম্বারেও কে
বা কারা ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও কথা বলে- ধারণা করছি এসব ওই
আসামিদের কাজ। তবে আমরা যতটুকু জানি আসামিরা অনেকেই কুমিল্লাতেই আছে। পুলিশ
আরেকটু প্রচেষ্টা করলেই তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারে। আমরা আসামিদের দ্রুত
গ্রেপ্তারও শাস্তি দাবী করছি।
পাঁচ নং পাঁচথুবি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের
মেম্বার হারুন উর রশিদ জানান, যারা এই মামলার প্রকৃত আসামি তাদেরকে দ্রুত
গ্রেপ্তার করার দাবী জানাই। করো ইন্ধনে যেন মামলা প্রবাহিত না হয় কিংবা
নির্দোষ কেউ যেন সাজা না পায় সেটিও আমাদের দাবী। তাই আমরা চাই পুলিশ দ্রুত
ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনুক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা
পুলিশের উপ- পরিদর্শক মোঃ মোজাম্মেল হক জানান, মামলার দুই জন আসামিই এখনো
পর্যন্ত গ্রেপ্তার আছে। বাকিদের ধরতে প্রচেষ্টা চলমান আছে। হাসপাতাল থেকে
অন্যতম আসামি অহিদ পালিয়ে যাবার বিষয়ে তিনি বলেন, সে সময় সবার চোখ ফাঁকি
দিয়ে অহিদ পালিয়ে যায়, তাকে ধরার জন্যও পুলিশ তৎপর।
প্রসঙ্গত, গত ১৮
মার্চ শবে বরাতের রাতে মসজিদে তাবারুক বিতরন নিয়ে ঝগড়ার জেরে ২০ মার্চ
সন্ধ্যায় খুন হয় পশ্চিম মাঝিগাছা এলাকার মাসুক মিয়া। সে পেশায় একজন
রঙমিস্ত্রী। তিনি দু’টি শিশুকন্যা সন্তানের জনক।