প্রথম ধাপে ছিলো ভোগান্তি। অভিযোগের পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় ভর্তুকি মূল্যে টিসিবি পণ্য বিক্রির বুথ সরিয়ে আনা হয়েছে কুমিল্লা নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিরপেক্ষ জায়গায়। পণ্য কিনতে গিয়ে পেলেন আতিথেয়তা। গ্রীষ্মের খরতাপ থেকে বাঁচাতে মাথার উপরে দেয়া হয়েছে ছামিয়ানা। যারা দাঁড়িয়ে লাইনে অপেক্ষা করতে পারেন না তাদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে চেয়ারের। আজ মঙ্গলবার কুমিল্লা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয় মুরাদপুর সরাকরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। গত ২৩ মার্চ প্রথম ধাপে পণ্য কিনতে গিয়ে হাউজিং এস্টেট এলাকায় কাউন্সিলর অফিসের সামনের বুথ থেকে যারা পণ্য না পেয়ে ফিরে এসেছিলেন তারাও স্বানন্দ্যে নির্ধারিত মূল্যে তেল, ডাল কিনে ফিরেছেন বাড়ি।
ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির জন্য গত ২০ মার্চ ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউিিন্সলর কার্যালয়ের সামনে স্থাপন করা হয় বিক্রির বুথ। একমাত্র বুথটি ওয়ার্ডের একপ্রান্তে হওয়ায় অনেকেই রিকশা ভাড়া ও দূরত্বের ভয়ে যান নি সেখানে। এছাড়া সেদিন অনেকেই ফিরে এসেছিলেন পণ্য না কিনতে পেরে। অভিযোগ ছিলো- স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলরের অনুমোদিত কার্ডধারীদের সে দিন কিনতে দেয়া হয়নি পণ্য। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষ জায়গা মুরাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডবাসীর সুবিধার কথা চিন্তা করে এই বিক্রয় বুথটি স্থানান্তর করা হয়েছে। পুরোনো বুথটি থেকেও সেখানকার কাছাকাছি মানুষ পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। রোজার মধ্যেও এই কার্যক্রম চলমান থাকার সম্ভাবনা আছে।
১৩,১৪,১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর নুরজাহান আলম পুতুল বলেন,প্রথমবার আমার দেয়া কার্ডধারীদের পণ্য কিনতে দেয়া হয় নি। কেন দেয়া হয় নি জানি না। তবে এবার ওয়ার্ডের মাঝামাঝি এলাকায় বুথ আসছে -যে যে কার্ড পেয়েছে সবাই পণ্য কিনতে পারছে। কোথাও কোন ঝামেলা নেই।
মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ রফিক জানান, আজ খুব সহজেই টিসিবি পণ্য কিনতে পারলাম। লম্বা লাইন কিংবা ভিড় ছিলো না। রোদ বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ছামিয়ানার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের সবগুলো বুথে যদি এমন ব্যবস্থা থাকে সাধারণ মানুষের জন্য খুবই উপকার হয়।]
স্থানীয় রানু বেগম জানান, ২০ তারিখ হাউজিং গিয়ে কিছু না কিনতে পেরে লাইনে এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে এসেছি। আজ কোন ঝামেলা ছাড়াই কিনতে পারলাম। কোন ভিড় ভোগান্তি নেই।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাশেম বলেন, বেশির ভাগ বয়স্ক লোকজন এই পণ্য কিনতে আসেন। মহিলাদের সংখ্যাও বেশি। তাদের জন্য বেশি সময় অপেক্ষা করে কষ্ট পেতে না হয় তাই বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকরা ওয়ার্ডবাসীকে সহজে পণ্য নিতে সহায়তা করেছেন। এখানে বুথ থাকলে আমরা চেষ্টা করবো সবার কাছে সহজভাবে পণ্য বিক্রি করতে। প্রশাসনকে ধন্যবাদ টিসিবি বুথটিকে স্থানান্তর করার জন্য।
জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল্লা আল মাহমুদ সহিদ বলেন, প্রথমবার টিসিবি পণ্য বিক্রি নিয়ে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের লোকজন নানান অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে প্রশাসন বুথটি সরিয়ে নেয়। আজ সবাই খুব সুন্দরভাবে পণ্য কিনতে পেরেছে। কোথাও থেকে কোন অভিযোগ পাইনি।