দেশকে এগিয়ে নিতে চাইলে ভোট দেওয়ার দিনও কথাটা মনে রাখতে হবে। এমনটা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘যদি চাই নারীদের এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে শতভাগ জনগোষ্ঠীর উন্নতি নিশ্চিত করতে, তাহলে আমি কী চাই, সেটা ভোটের বাক্সে ব্যালট ফেলব যেদিন, সেদিনও স্পষ্টভাবে জানতে হবে।’
শুক্রবার (১ এপ্রিল) দুপুরে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী'র সপ্তম বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘নারীর অগ্রগতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো যে অপশক্তি, দেশবিরোধী শক্তি, প্রগতিবিরোধী শক্তি, একাত্তরের গণহত্যাকারীদের দোসর, পঁচাত্তরের হত্যাকারী ও তাদের দোসর, ২০১৩/১৪ সালের অগ্নি-সন্ত্রাসী— আমরা গণতন্ত্রের নামে তাদের ভোট দেবো আবার নারীর প্রগতি চাইবো, দেশের প্রগতি চাইবো— এটা সোনার পাথর বাটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতিহাস সব মানুষের জন্য জরুরি। কোনও রাজনীতিবিদ যদি তার ভূখণ্ডের অন্তত একশ বছরের ইতিহাস না জানেন তবে তিনি রাজনীতি করতে পারেন না। আমাদের শিক্ষার্থীদের নিজেদের অন্তত ভাষা, সাহিত্য ও ইতিহাস শিখতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষকদের অধিকাংশই ঘটনাচক্রে শিক্ষক। দেখা যায়, তিনি হয়তো অন্য কোনও চাকরি করতে চেয়েছেন বা বিসিএসে তার হয়তো ২৭তম চয়েস ছিল শিক্ষা ক্যাডার।’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কলেজে অনার্স ফলপ্রসূ হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক কলেজে অনার্স দিয়েছিলাম। যা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। তাই আপাতত অনুমোদন দেওয়া বন্ধ রেখেছি। বরং পুরো একটা পুনর্বিন্যাসের চেষ্টা করছি। ডিগ্রি যে কোর্সটা হয়, সেখানে ভাষা, আইসিটি, অন্ট্রাপ্রিনিউরশিপ সংযুক্ত করার চেষ্টা করছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সবাই চাইছে রমজানে একটু গরম। ক্লাস বন্ধ রেখে দেন। এখন ক্লাস করা খুবই দরকার। দুটো বছর শ্রেণিকক্ষে ক্লাস হয়নি। এখন না পারলে সিলেবাস শেষ করা কষ্টকর হয়ে যাবে।
১৩ দিন ধরে শাহবাগে অবস্থানরত প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধী স্কুলের নীতিমালার মধ্যে যদি তারা পড়েন নিশ্চয়ই হবে। আশা করছি শিগগিরই নতুন এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিতে পারবো। এটি নিয়ে কাজ চলছে। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে আমি মনে করি কোনও শিক্ষকের আন্দোলনে নামার দরকার নেই। তাদের দাবি যদি যৌক্তিক হয় সরকার এমনিতেই পূরণ করবেন। প্রতিবন্ধী স্কুল যারা চালান, তাদের কথা আমরা অবশ্যই চিন্তা করবো।
উপাচার্য নিয়োগে নীতিমালার বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা যে কোনও বিষয়ে ঢালাও মন্তব্য করি। ভালোমন্দ সব জায়গায় আছে। দুজন বা পাঁচজন ভালো কাজ করলেন না । হয়ত একটু ভুল করলেন। তার জন্য সকলকে দায়ী করা ঠিক নয়।
বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি ড. মো. মাহবুবর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ডা. চৌধুরী শাহেদ কাদেরীর সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুনসহ সম্মিলনীর বিভিন্ন বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলার নেতারা।