অর্থনৈতিক সংকট থেকে উদ্ভূত চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে শ্রীলংকার সরকার। তবে এসব বিধিনিষেধ ভেঙে দেশটির প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী কলম্বোতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন নাগরিকরা। রোববার (৩ এপ্রিল) কারফিউ অমান্য করে বিরোধী সামাগি জনা বালাওয়েগয়া (এসজেবি) জোটের বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ ও এর সমর্থকরা কলম্বোর স্বাধীনতা স্কোয়ারের কাছে জড়ো হয়ে এই বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এসময় তারা প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। অন্য একটি বিরোধী জোটের সদস্যরাও রাজধানীর বাইরে মূল্যস্ফীতি, খাদ্য ঘাটতি ও লোডশেডিংয়ের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
কলম্বোর প্রাণকেন্দ্রেই স্বাধীনতা স্কয়ার অবস্থিত। এসময় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে দেয়। তবে বিরোধী নেতা সাজিত প্রেমাদাসা মিছিল চালিয়ে যেতে দেওয়ার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মানুষ বাঁচতে পারছে না। এটা একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ। এসময় তিনি কারফিউর প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, মানুষের ক্ষোভ থেকে রাজাপাকসেকে বাঁচাতেই এ কারফিউ জারি করা হয়েছে।
শনিবার (২ এপ্রিল) দেশটির সরকার নির্দেশ দেয় ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইউটিউব চ্যানেল বন্ধ রাখার। শ্রীলংকা সরকার বলছে যে, ভুল তথ্য ঠেকাতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
দুই কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে চলছে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ। শনিবার সন্ধ্যা ৬ টায় শুরু হওয়া কারফিউ চলবে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। দেশজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় কারফিউ জারি করে দেশটির সরকার।
প্রসঙ্গত, শ্রীলংকায় অর্থনৈতিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বিরুদ্ধে আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের কয়েক ঘণ্টা সংঘর্ষ চলে।
জানা গেছে, তীব্র ডলার ঘাটতিতে দেশটির সরকার প্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে জ্বালানি আমদানি করতে পারছে না। এদিকে দৈনিক লোডশেডিং বেড়ে ১৩ ঘণ্টায় দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া সাধারণ শ্রীলংকানদের জন্য মূল্যস্ফীতি মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে। কারণ গত মাসে দেশটির সরকার মুদ্রার অবমূল্যায়ন করেছে।