নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত
নিবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনের তফসিল হতে পারে ২০ অথবা ২২ এপ্রিল।
এক্ষেত্রে ভোট হবে ঈদের পর। বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।
ইসির
সংস্থাপন শাখার উপ-সচিব মো. এনামুল হক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার কমিশন বৈঠক
অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সভায়
কুসিকসহ অন্যান্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হবে।
কাজী
হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের এটিই প্রথম ‘কমিশন সভা’।
বৈঠকটি ৫ এপ্রিল বেলা ১১টায় নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। সভার
আলোচ্য সূচিতে রাখা হয়েছে- কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন, পৌরসভা
নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য
নির্বাচন ও উপ-নির্বাচন এবং বিবিধ।
এদিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন
নির্বাচন নিয়ে আইনী জটিলতা না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্বাচন কমিশনকে
চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সীমানা,
ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ, মামলা ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য প্রদান সংক্রান্ত চিঠিটি
গতকাল ৪ এপ্রিল প্রদান করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল
ইসলাম।
চিঠিতে জানানো হয়, ‘কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের এলাকা
সম্প্রসারণের লক্ষ্যে উক্ত সিটি কর্পোরেশন হতে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখের
১৩০নং স্মারকে একটি প্রস্তাব এ বিভাগে প্রেরণ করা হয়। যথাযথ কর্তৃপক্ষের
অনুমোদনক্রমে প্রস্তাবটি নথিজাত করা হয়। প্রস্তাবিত সীমা সম্প্রসারণ বিষয়ে
জনৈক কাজী মাহবুবুর রহমান গং মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন
(নং-১২৫৭৭/২০১৬) দায়ের করেন। মাননীয় আদালত কর্তৃক উক্ত রিট পিটিশনে গত ২২
আগস্ট ২০১৭ তারিখে অহহবীঃঁৎব-প. ফধঃবফ ২৯.০৯.২০১৬ (অর্থাৎ কুমিল্লা সিটি
কর্পোরেশনের ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখের ১৩০নং স্মারক)টি উরংঢ়ড়ংব করার
জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। সে প্রেক্ষিতে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সীমা
সম্প্রসারণ প্রস্তাব নথিজাত করার বিষয়টি উক্ত সিটি কর্পোরেশনকে অবহিত করা
হয়।
২। স্থানীয় সরকার বিভাগের বেসরকারি প্যানেল আইনজীবী মোঃ আশরাফুল
আলমের নিকট হতে নির্বাচন কমিশন হতে চাহিত তথ্যাদির বিষয়ে মতামত গ্রহণ করা
হয় যা নিম্নরূপ:
“সকল কাগজাদি এবং আইন পর্যবেক্ষণ করে আমি মনে করি যে,
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এর সীমানা, ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ সংক্রান্ত এ
পর্যায়ে কোন আইনগত জটিলতা বিদ্যমান নেই। তবে ঈড়হঃধসঢ়ঃ চবঃরঃরড়হ ঘড়
২৪.০১.২০২১ এ যথাযথ জবাবসহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আবশ্যক।”
উল্লেখ্য,
ঈড়হঃধসঢ়ঃ চবঃরঃরড়হ ঘড় ২৪.০১.২০২১ এ সরকারের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার
জন্য ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এমতাবস্থায় রিট পিটিশন
নং ১২৫৭৭/২০১৬ এর মাননীয় হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী অহহবীঃঁৎব-প (কুমিল্লা
সিটি কর্পোরেশনের ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখের ১৩০নং স্মারকে কুমিল্লা সিটি
কর্পোরেশনের সীমানা সম্প্রসারণের প্রস্তাব) যথাযথ কর্তৃপক্ষের
অনুমোদনক্রমে নিষ্পত্তিপূর্বক কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনকে অবহিত করা হয়েছে
এবং কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সীমানা, ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ সংক্রান্ত এ
পর্যায়ে কোন আইনগত জটিলতা বিদ্যমান নেই মর্মে নির্দেশক্রমে জানানো হলো।
প্রসঙ্গত,
২০১৭ সালের ৩০ মার্চ সর্বশেষ কুসিক নির্বাচন হয়েছিল। নির্বাচিত করপোরেশনের
প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওই বছরের ১৭ মে। এক্ষেত্রে ভোটগ্রহণ করতে হবে
আগামী ১৬ মের মধ্যে। কর্মকর্তারা বলছেন, আইন অনুযায়ী প্রথম সভা থেকে
পরবর্তী পাঁচ বছর হয় নির্বাচিত করপোরেশনের মেয়াদ। এজন্য মেয়াদ শেষ হবে ২০২২
সালের ১৬ মে। আর ভোটগ্রহণ করতে হয় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে। এ
হিসেবে গত বছরের ১৬ নভেম্বর থেকে এ সিটি নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়ে
গেছে।
২০১৭ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু দ্বিতীয়বারের
মতো এ সিটিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ সিটিতে সে সময় ভোট হয়েছিল ১০৩টি
কেন্দ্রে। মোট ভোটার ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬ জন।
২০১১ সালে দুটি পৌরসভাকে
একীভূত করে গঠন করা হয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নামে নতুন একটি করপোরেশন।
ওই বছরই প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০১৭ সালে এসে এ সিটি
পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি ইউপিকে অন্তর্ভুক্ত করে আয়তন বাড়ানো হয় প্রায়
তিনগুণ। এতে দেখা দেয় সীমানা জটিলতা। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ২৭টি ওয়ার্ড
নিয়ে গঠিত।