তিন মাসে খরচ ৭৫ কোটি, গোমতী বাইপাস সড়ক নির্মাণে আবার ২০ কোটি!
১৪২টি কবরস্থান ও ৪টি শ্মশান উন্নয়নে সর্বোচ্চ ৫৬ কোটি ৫৭ লাখ
স্টাফ
রিপোর্টার।। আগামী ১৬ মে এর মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কুমিল্লা সিটি
কর্পোরেশনের নির্বাচন। এপ্রিলের ২০ তারিখের দিকে ঘোষণা করা হতে পারে
তফসিল। কিন্তু কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে ৪১২ কোটি ৭৫ লাখ
টাকার টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। এই ৪১২ কোটি টাকার মধ্যে নগদ প্রাপ্ত ৭৫
কোটি টাকা খরচ করতে হবে এ বছরের জুন মাসের মধ্যে অর্থাৎ তিন মাসের মধ্যে।
ইতিমধ্যে ৪১টি প্যাকেজে এই ৪১২ কোটি টাকার দরপত্র আহবান করা হয়েছে। এর
মধ্যে ১টি প্যাকেজে ১৪২টি কবরস্থান ও ৪টি শ্মশান উন্নয়নে সর্বোচ্চ ৫৬
কোটি ৫৭ লাখ টাকার টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। নির্বাচনের আগেই এ কাজ শেষ
করা হতে পারে।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ভোটকে সামনে রেখে তরিঘড়ি এসব তৎপরতা ও এতো ব্যয়ের উন্নয়ন কাজের যথাযথ বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা
বলেছেন, উন্নয়ন নয় ভোটের মাঠে এতো বিপুল অর্থ ব্যয় করতে যাচ্ছে সিটি
কর্পোরেশন যা বর্তমান পরিষদকে সুবিধা দেওয়া সামিল। এতে কুমিল্লার মানুষের
ভাগ্য উন্নয়নের চেয়ে অর্থ লোপাটের তালিকা দীর্ঘ হবে।
গত ডিসেম্বরে
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৫৩৮ কোটি ১০ লাখ
টাকা বরাদ্দ দেয় একনেক। ৭ ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি
সম্মেলনকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের সে বৈঠক
অনুষ্ঠিত হয়। এতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উন্নয়নের জন্য ১ হাজার ৫৩৮ কোটি
বরাদ্দের অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই বরাদ্দের অনুমোদন হওয়ার পর ১১ ডিসেম্বর
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে যান সিটি মেয়র ও
কাউন্সিলররা।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, একনেকে
বরাদ্দকৃত ১৫৩৮ কোটি টাকার মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৪১ টি
প্যাকেজে ৪১২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার দরপত্র আহবান করা হয়। এর মধ্যে একটি
প্যাকেজে ৬৮১৩৭৩ নম্বর টেন্ডার থেকে ৬৮১৩৭৮ নম্বর টেন্ডারে ১৪২টি কবরস্থান ও
৪টি শ্মশান উন্নয়ন কাজের জন্য সর্বোচ্চ ৫৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা
হয়েছে। এই কবরস্থান ও শ্মশানগুলো সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে অবস্থিত।
৩১ মার্চ এ টেন্ডার উন্মুক্ত করা হয়। অন্য ৪০টি প্যাকেজের মধ্যে সাম্প্রতিক
সময়ে নির্মিত নিম্নমানের কাজে নির্মাণের ফলে ভেঙ্গে যাওয়া আমতলী থেকে
জগন্নাথপুর মন্দির পর্যন্ত গোমতী বাইপাস সড়ক বিটুমিন কার্পেটিংয়ের কাজের
জন্য ২০ কোটি ৬৯ লাখ টাকার দরপত্র আহবান করা হয়। ৬৮০১০০ নম্বরের এই টেন্ডার
দাখিলের শেষ সময় ২৮ এপ্রিল। বিকল্প সড়ক হিসেবে নির্মিত গোমতী বাইপাস সড়ক
নির্মানের সময় স্থানীয় মানুষ কাজের নিম্নমানের জন্য সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। কিন্তু তা আমলে তো নেওয়াই হয় নি
বরং এবার আরো ২০ কোটি ৬৯ লাখ টাকার নতুন দরপত্র আহবান করা হলো।
অবকাঠামো
উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অন্য প্যাকেজগুলোর মধ্যে টমসনব্রিজ থেকে ইয়াছিন
মার্কেট, উনাইসার ইপিজেড গেইট থেকে উনাইসার ব্রিজ, নোয়াগাও চৌমুহনী থেকে
উনাইসার ব্রিজ, উনাইসার থেকে রাজাপাড়া ব্রিজ ও ঢুলিপাড়া থেকে রাজাপাড়া
ব্রিজ পর্যন্ত ৪৬৪১ মিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণে ২০ কোটি ৩১ লাখ টাকা,
টমসনব্রিজ থেকে ইয়াছিন মার্কেট, উনাইসার ইপিজেড গেট থেকে উনাইসার ব্রিজ,
নোয়াগাও থেকে উনাইসার ব্রিজ, উনাইসার থেকে রাজাপাড়া ব্রিজ ও ঢুলিপাড়া থেকে
রাজাপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত বিসি ও আইসিসি কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য ১৯ কোটি ৭
লাখ টাকা, অশোকতলা এনএসআই অফিস কালভার্ট থেকে ধর্মপুর রেল গেইট, ধর্মপুর
রেল গেট থেকে খাদ্য গুদাম-অশোকতলা-গোবিন্দপুর রেল গেট-কাটাখালি খালের
আরসিসি ও ক্রস কালভার্ট নির্মাণে ১৩ কোটি ৫ লাখ টাকা, টমসনব্রিজ থেকে
নোয়াগাও চৌমুহনী সীমানা দেওয়াল নির্মাণে ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকার দরপত্র আহবান
করা হয়েছে।
৪০টি প্যাকেজের মধ্যে চকবাজার বাস টার্মিনালের উন্নয়নে ৪
কোটি ৭৮ লাখ টাকার দরপত্র আহবান করা হয়। বাকি প্যাকেজগুলোর মধ্যে ২৭টি
ওয়ার্ডের কোন না কোন সড়ক মেরামত, ড্রেন নির্মাণ, রির্টানিং ওয়াল নির্মাণ
কাজ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল
ইত্যাদি নির্মাণে ১২ কোটি ২ লাখ, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে সড়ক, ড্রেন ও দেওয়াল
নির্মাণে ১২ কোটি ৪৩ লাখ, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন ও দেওয়াল নির্মাণে
১০ কোটি ৪১ লাখ, ১ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, দেওয়াল নির্মাণে ৮ কোটি ৬৮
লাখ, ২ নম্বর ওয়ার্ডে সড়ক, ড্রেন ও দেওয়াল নির্মাণে ৭ কোটি ৮০ লাখ, ৬ নম্বর
ওয়ার্ডে সড়ক, ড্রেন ও দেওয়াল নির্মাণে ৯ কোটি ৬৪ লাখ, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে
সড়ক, ড্রেন, দেওয়াল নির্মাণে ৭ কোটি ৬৬ লাখ, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন,
দেওয়াল নির্মাণে ৯ কোটি ৫৭ লাখ, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উন্নয়নে ৫ কোটি ৩৫ লাখ,
১০ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৯ কোটি ৩৬
লাখ, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৬ কোটি
৯২ লাখ, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৭
কোটি ১৩ লাখ, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি
নির্মাণে ৬ কোটি ৪০ লাখ, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল
ইত্যাদি নির্মাণে ৪ কোটি ৯১ লাখ, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা
দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ১২ কোটি ১০ লাখ, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন,
সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৭ কোটি ৩৪ লাখ, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক,
ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, ২৪ নম্বর
ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৭ কোটি ৫০ লাখ, ১
নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৪ কোটি ২৪ লাখ,
২ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৪ কোটি ৬৩
লাখ, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৫ কোটি
৩৯ লাখ, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৬
কোটি ৪০ লাখ, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি
নির্মাণে ৭ কোটি ৭০ লাখ, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল
ইত্যাদি নির্মাণে ১ কোটি ৭৩ লাখ, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা
দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৮ কোটি ৭৮ লাখ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন,
সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৭ কোটি ৮৫ লাখ, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক,
ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৮ কোটি ৪৬ লাখ, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের
সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৯ কোটি ৫৬ লাখ, ৪ নম্বর
ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণে ৮ কোটি ১১ লাখ টাকার
দরপত্র আহবান করা হয়েছে।
প্যাকেজগুলোর মধ্যে এছাড়াও রেইসকোর্স
চিড়িয়াখানা রোড থেকে কালিয়াজুড়ি রোডের আরসিসি সড়ক, ড্রেন নির্মাণ,
রেইসকোর্স জাফর খান রোড থেকে বাদশা মিয়ার বাজার রোড ও ড্রেন, রেইসকোর্স
থেকে পুরনো ঢাকা চট্টগ্রাম রোড নির্মাণে ৬ কোটি ১১ লাখ, কালিয়াজুড়ি মোতালেব
হাউস থেকে মদন মেম্বার ও ভূইয়া হাউস পর্যন্ত আরসিসি ড্রেন, পাক্কার মাথা
থেকে মুড়াপাড়া আরসিসি ড্রেন নির্মাণে ৬ কোটি ১ লাখ, কালিয়াজুড়ি শহীদ মিনার
থেকে মুড়াপাড়া রেল গেইট আরসিসি রোড ও ড্রেন, ফুলমিয়া হাউস থেকে কালিয়াজুড়ি
ঠাকুরপুকুর পর্যন্ত রোড ও ড্রেন নির্মাণে ৬ কোটি ৫০ লাখ, কাপ্তান বাজার
পাক্কার মাথা থেকে কুমিল্লা হাইস্কুল রোড উন্নয়নে ৫ কোটি ৬৭ লাখ, দিশাবন্দ
উত্তরপাড়া এয়াপোর্ট রোড থেকে লক্ষিনগর উপজেলা রোড সড়ক উন্নয়ন ও ড্রেন
নির্মাণ, উনাইসার এয়ারপোর্ট রোড থেকে উনাইসার খাল আরসিসি রোড উন্নয়নে ৬
কোটি ৯১ লাখ টাকার দরপত্র আহবান করা হয়েছে।
এই সব টেন্ডারের সবগুলোই ২৫
এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিলের মধ্যে দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। একনেকে
অনুমোদনকৃত ৩০জুন ২০২৩ সালের মধ্যে এই ৪১২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার কাজ শেষ করতে
হবে। আর এর মধ্যে নগদ পাওয়া ৭৫ কোটি টাকার কাজ শেষ করতে হবে এই তিন মাসের
মধ্যে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আবু সায়েম
ভূইয়া জানান, একনেকে যে বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়েছে। এই ৪১ প্যাকেজের কাজ সে
বরাদ্দের মধ্যেই। পুরো বরাদ্দটি চার বছরে শেষ করতে হবে। এর মধ্যে আগামী এক
বছরে ৪১ কোটি টাকার কাজ করা হবে, যার টেন্ডার আহবান করা হয়েছে।
কুমিল্লা
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ৭৫
কোটি টাকা হাতে পেয়েছি । প্রথম বছরে আমরা ২৩১ কোটি টাকার কাজ শেষ করবো। যত
তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে পারবো তত তাড়াতাড়ি টাকা পাবো।
নির্বাচনের সময়ে এই দরপত্র আহবান বর্তমান পরিষদকে সুবিধা দিতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এ
ব্যাপারে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র
প্রার্থী নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম বলেন, এ ৪১টি প্যাকেজের টেন্ডার
নির্বাচনকে প্রচন্ডভাবে প্রভাবিত করবে। আওয়ামীলীগ সরকারের টাকায় বিএনপির
মেয়র প্রার্থী কাজ ভাগ করবে, বিলি করবে এবং নির্বাচনে তার অবস্থানকে
পাকাপোক্ত করবে এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। নির্বাচন আচরনবিধির লঙ্ঘনের মধ্যে
এটি পড়ে। কারন আজ কালের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। স্থানীয়
সরকার মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে কোন উদাসীনতা আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা উচিত।
কুমিল্লা
সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী আনিসুর
রহমান মিঠু বলেন, নির্বাচন যখন খুব কাছাকাছি, নির্বাচনের সময় এতো দ্রুত এতো
টাকার টেন্ডারকাজ উদ্দেশ্যমূলক। নির্বাচনের কবরস্থান মেরামতের নামে এতো
টাকা খরচ করা উদ্দেশ্য মহৎ মনে হচ্ছে না। দীর্ঘ দিন কবরস্থান ও মসজিদ
্উন্নয়নের নামে অনেক টাকা খরচ করা হয়েছে। এগুলোর দৃশ্যমাান উন্নয়ন দেখি নি।
শুধু টাকা খরচ হয়েছে দেখানো হয়, কাজটা কি হলো বুঝা যায় না। নির্বাচনের পরে
সবাইকে সাথে নিয়ে এ উন্নয়ন টাকা যাতে সঠিকভাবে ব্যয় হয় তার চিন্তা করতে
হবে।